Ads

মার্কেটের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয় ব্র্যান্ড স্যামসাং । হাই প্রাইজের দামের স্মার্টফোন থেকে মিডিয়াম এবং লো প্রাইজের মধ্যে ভালো মানের স্মার্টফোন রিলিজ করার জন্য তাদের অবদান অতুলনীয় । খুবই স্বল্পমূল্যের ভিতরে ভালো মানের ফিচার দেওয়ার জন্য স্যামসাংয়ের অবস্থান অনেকটাই উপরে । মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটি প্রাইজের ভিতরে ভালো মানের একটি মডেল হচ্ছে Samsung Galaxy A22 । বডি ডিজাইন এবং ক্যামেরা পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটির চাহিদা মার্কেটগুলোতে ব্যাপক । ডিভাইসটি মার্কেটে রিলিজ হওয়ার পর থেকেই বেড়ে চলেছে মডেলটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা । কতটা আস্থার সাথে আমরা এই ফোনটিকে চালাতে পারব ? দামের সাথে পারফরম্যান্সের মিল আছে কিনা ? কি কি সুবিধা এবং অসুবিধার মুখোমুখি হব ? গেমিং এর জন্য যোগ্য কিনা ? তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক ।



Samsung Galaxy A22 Price in Bangladesh 2021



নেটওয়ার্ক কানেকশন



বর্তমান দেশের নাম্বার ওয়ান নেটওয়ার্ক স্পিড 4 জি এই মোবাইলটির সংযোগে রাখা হয়েছে । প্রতি সেকেন্ডে 4 জি নেটওয়ার্কের ফুল স্পিড 42.2 এমবিপিএস প্রতি সেকেন্ডে উপভোগ করা যাবে । nano-sim এর সাথে সাথে ব্যবহার করা যাবে ডুয়েল হাইব্রিড সিম । v5.0 ব্লুটুথ এর সাথে হটস্পট, ওয়াইফাই ,wifi-direct এর মত তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলো অনায়াসে ব্যবহার করা যাবে । এফএমরেডিও এবং জিপিএস এর পাশাপাশি চালানো যাবে ওটিজি এবং ইউএসবি ক্যাবল । মার্কেট ডিপেন্ডেন্ট এর এনএফসি ব্যবহার করা হয়েছে । স্মার্টফোনটি দিয়ে উপভোগ করা যাবে 5 জি নেটওয়ার্ক স্পিড । তবে আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত 5 জি নেটওয়ার্ক স্পিড চালু হয়নি । এটা আশা করা যায় যে 5 জি নেটওয়ার্ক অপশন চালু হলে স্মার্টফোনটি দিয়ে ফাইভ জেনারেশন নেটওয়ার্ক স্পিড ব্যবহার করা যাবে । 4 জি নেটওয়ার্ক স্পিড এর কিছু ভার্সন রয়েছে সেগুলো হলো  1,2,3,5,7,8,20,28,38,40,41 । 


বডি ডিজাইন


বডি ডিজাইনের জন্য এই ডিভাইসটি প্রায় সবার কাছেই পারফেক্ট বলে মনে হয়েছে । মিনিমাল নচ বডি স্টাইল এর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো । প্রথম দৃষ্টিতেই আমাদের চোখ পড়বে মডেলটির ডিজাইনের উপর । মোবাইলটির সম্পূর্ণ বডিটি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এবং গ্লাস ফ্রন্ট এর আবদ্ধ । তবে ব্যবহার করা হয়নি ধুলোবালি এবং পানিরোধী কোন সুবিধা । 205 গ্রামের এই মডেলটিকে কালো, সাদা, লাল এবং নীল ভিন্ন চারটি কালারে পাওয়া যাবে । মোবাইলকে ওজন মোটামুটি ভালো হলেও দেখতে অনেকটাই স্লিম । ফোনটিকে খুব সহজেই যে কেউ তার হাতের সাথে পারফেক্ট ভাবে মিলিয়ে নিতে পারবে । 164 মিলিমিটার দৈর্ঘ্য , 75.8 মিলিমিটার প্রস্থ এবং 8.9 মিলিমিটার পুরুত্ব উপলব্ধি করা যায় বডি সাইজে । মডেলদের আকার এবং ওজন আমার কাছে ঠিকঠাক মনে হয়েছে । মোবাইলটিকে কিন্তু খুব সহজেই হাতে নিয়ে ব্যবহার করা যাবে ।


স্টোরেজ


প্রায় সবাই ফোন কেনার পূর্বে স্টোরেজের উপর লক্ষ্য রাখে । কেননা ভালো স্টোরেজ না থাকলে ফোনটিকে ফাস্টেস্ট স্পিডে চালানো যাবে না । এই মোবাইলটির মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে ডেডিকেটেড স্লট । ইন্টার্নাল মেমোরিতে 3/4/6 জিবি রেমের পাশাপাশি রয়েছে 32/64/128 জিবি রোম । ওটিজি ক্যাবল দিয়ে প্রয়োজনমতো রেম এবং রোম বাড়িয়ে নেওয়া যাবে খুব সহজেই । হাই মিডিয়াম কোয়ালিটি স্টোরেজ ব্যবহার করার কারণে ফোনটিকে ফাস্টেস্ট স্পিডে ব্যবহার করা যাবে বলে মনে করা যায় । বাড়তি স্টোরেজে প্রয়োজন মতো অনেক কিছুই সংরক্ষন করা যাবে ‌‌। তবে বেশি পরিমাণে রাখাটা বোকামি হবে কেননা এতে করে ফোনটি ধীরগতির পারফরম্যান্স দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । মেমোরি পারফরম্যান্সের সবকিছু ঠিকঠাক মনে হলেও স্টোরেজে অনেকটা পুরনো ভার্সনের ডেডিকেটেড স্লট ব্যবহার করা হয়েছে । এই বাজেটের মধ্যে আসলে এই বিষয়টি মানিয়ে নেওয়ার মতো নয় । এখানে আরেকটু উন্নত ভার্সন ব্যবহার করলে ভালো হতো বলে আমি মনে করি ।


এলসিডি প্যানেল


পিএলএস আইপিএস টাইপ এর এলসিডি প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে । 6.5 ইঞ্চি বৃহৎ আকারের ডিসপ্লে সাইজ রয়েছে । 720×1600 পিক্সেল ডিসপ্লে রেজুলেশন এর সাথে এলসিডি ঘনত্ব রয়েছে 264 পিপিআই ডেনসিটি । তবে ডিসপ্লে সুরক্ষা হিসেবে কোন প্রটেকশন রাখা হয়নি । এর কারণে ফোনটির ডিসপ্লে হালকা আঘাতে ভেঙ্গে যেতে পারে । টাচ স্ক্রিনে রয়েছে মাল্টিটাচ এর মত সুবিধা । কম বাজেটের মধ্যে ডিসপ্লে ডেকারেশন অনেকটা চোখে পড়ার মতো বলা যায় । টাচস্ক্রিনে থাকছেন 90 হার্জের রিফ্রেশ রেট । ডিসপ্লে রেজুলেশন এর দিকে লক্ষ্য করলে এখানে দেখা যাবে খুব ভালো একটা রেজাল্ট নেই । নির্ধারিত বাজার সিগমেন্টে ডিসপ্লে রেজুলেশন 1080×2400 পিক্সেল দেওয়া উচিত ছিল । স্বল্প আলোতে ভালো ব্রাইটনেস পাওয়া গেলেও রোদে যাবার পর ব্রাইটনেস এর কিছুটা দুর্গতি চোখে পড়ে । এদিক গুলো বাদ দিয়ে ডিসপ্লে ডেকোরেশনের বাকি সবগুলো আইটেম ভালো লেগেছে ।


অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর



গুগলের তৈরি এন্ড্রয়েড ভার্সন 10 এর উপস্থিতি লক্ষ করা যায় এই মডেলটির অপারেটিং সিস্টেমে । প্রসেসরটি পর্যবেক্ষণ করলে Octa-Core, up to 2.35 GHz মডেল এবং মিডিয়াটেক হেলিও p35 মডেলের চিপসেট ও জিপিইউ রয়েছে PowerVR GE8320 । স্যামসাং কোম্পানিটি তাদের রিলিজ করা প্রতিটি স্মার্টফোনেই কিন্তু সফটওয়্যার এর দিকে আলাদাভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে । প্রসেসর এবং চিপসেট গুলোতে ভালো এবং উন্নত মানের মডেল ব্যবহার করে থাকে । কিন্তু এই মডেলটিতে আমরা একটু ভিন্ন রূপ দেখতে পাই । অক্টা কোর প্রসেসর রয়েছে যেটা মেনে নেওয়া গেলেও মিডিয়াটেক চিপসেট আমাদের কাছে অনেকটাই অনাকাঙ্ক্ষিত । গুগোল নতুন অপারেটিং সিস্টেম চালু করলে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে সেই নতুন অপারেটিং সিস্টেম উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে । চিপসেট এবং জিপিইউর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মডেলটি অনেকটাই গর্জিয়াস মনে হতো আমাদের প্রায় সকলের কাছেই । 


ক্যামেরা



মোবাইলটির প্রাইমারি ক্যামেরা কালেকশনে হোয়াট ক্যামেরা সেটআপ দেখতে পাই । 48+5+2+2 মেগা পিক্সেলের মোট চারটি ক্যামেরা রয়েছে প্রাইমারি ক্যামেরা সেটআপে । ওয়াইড ক্যামেরায় রয়েছে 48 মেগাপিক্সেল এর মত একটি ক্যামেরা , 5 মেগাপিক্সেলের  আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা দিয়ে 123 ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলা যাবে , ছবির ভিতরে স্পষ্টভাব তোলার জন্য ম্যাক্রো ক্যামেরায় রয়েছে 2 মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা এবং ডেপ্ট ক্যামেরায় রয়েছে 2 মেগাপিক্সেলের । প্রাইমারি ক্যামেরা ঠিক সাথেই অবস্থান করা হয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট । সেলফি তোলার জন্য সামনের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে 8 মেগাপিক্সেলের রেয়ার ক্যামেরা । প্রাইমারি এবং সেলফি ক্যামেরা দিয়ে যেকোন ভিডিও 1080 পিক্সেলে ফুল এইচডি মুডে একত্রে দেখা এবং ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে । একটি আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে প্রাইমারি ক্যামেরাগুলো দিয়ে 8000×6000 পিক্সেলে ছবি অথবা ইমেজ তোলার সুযোগ থাকছে । 


ব্যাটারি পারফরম্যান্স



এই মডেলের ব্যাটারি পারফরমেন্সে আমাকে অনেকটাই অবাক করেছে । লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি টাইপের ক্যাপাসিটিতে রয়েছে মিডিয়াম কোয়ালিটির পাওয়ার 5000mAh । অবাক করা কান্ড কেননা কম বাজেটের মধ্যে এরকম ব্যাটারি খুব কম মডেলেই পাওয়া যায় । মোবাইলটির ব্যাটারি 15 ওয়াট দ্রুত চার্জ হবে । টুকটাক অনলাইন ব্যবহারে ফোনটি একদিন চলে যাবে অনায়াসেই । ব্যাটারিটি ফুল চার্জ হতে 2 ঘন্টা সময় লাগতে পারে । ব্যাটারি পারফরমেন্স অনেকটাই ভালো এখানে খারাপ বলার কোন প্রশ্নই আসে না । ব্যাটারি চার্জিং স্পিড অনেকটাই স্লো বলে মনে হয়েছে । চার্জিং সিস্টেমে আরেকটু ফাস্টেস্ট গতি থাকলে ভাল হতো । তারবিহীন অথবা রিভার্স চার্জিং সিস্টেম এর কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি । ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম থাকলে চার্জিং ব্যবস্থার ভ্যালু অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকতো ।


গেমিং পারফরম্যান্স কেমন দিবে ?



মোবাইলটিতে যদিও আলাদা করে গেমিং প্রসেসর ব্যবহার করা হয়নি তাও অফলাইন গেম গুলো টুকটাক ভালোভাবে খেলা যাবে । কিন্তু অনলাইন গেম গুলো খেলার ক্ষেত্রে ফোনটা গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এবং পাবজি, ফ্রী ফায়ার এর মত প্রথম ধাপের গেমগুলো উন্নত মানের গ্রাফিক্সের সাথে খেলা যাবে না বললেই চলে । মোবাইলের ভেতরে এই গেম গুলো ইন্সটল করার পরে মোবাইলটি একটু ধীর গতিসম্পন্ন হয়ে যেতে পারে । আমাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই অনলাইন গেম গুলো স্মার্টফোন অথবা মোবাইল ফোন দিয়ে গেম প্লে করে থাকি । এদের মধ্য থেকে যারা অনলাইন গেমগুলোকে খেলার জন্য এই ডিভাইসটিকে টার্গেট করেছেন তাদের জন্য কিছু কথা না বললেই নয় , মডেলটি দিয়ে টুকটাক গেম প্লে করা গেলেও হাই গ্রাফিক্সের সথে অনলাইন জগতের প্রথম সারির গেমগুলোকে খেলা যাবে না । পরিশেষে এই মতামতে উপনীত হওয়া যায় যে মূলত গেম খেলার জন্য এই স্মার্টফোনটিতে ভালো মানের ফিচার পাওয়া যাবে  
না ।

মোবাইলটিকে কি অনলাইন থেকে অর্ডার করা যাবে ?



বর্তমান এই সময়ে আমরা ঘরে বসেই স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপ দিয়ে ই-কমার্সের সুবিধা নিয়ে যেকোনো পণ্য সামগ্রী অনলাইন থেকে অর্ডার করতে পারি । এই মোবাইলটিকে আমরা অনলাইন থেকে অর্ডার করে নিতে পারব । তবে ফোনটি কিনার পূর্বে ওয়েবসাইটটি যাচাই করে নেওয়া ভালো । বর্তমানে বাংলাদেশের স্যামসাং কোম্পানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যার নাম samsung.com । এই ওয়েবসাইটটিতে ঢুকে আপনি আপনার পছন্দ করা স্মার্টফোনটি অর্ডার করতে পারবেন । এই মোবাইলটিকেও আমরা চাইলে তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করতে পারব । এখান থেকে অর্ডার করার জন্য বিন্দুমাত্র কোন টেনশন নেই । কেননা তারা সত্যতার সাথে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা করে থাকে ।


রিলিজের সময় এবং ফোনটির প্রাইস



12, আগস্ট 2021 Samsung galaxy A12 মডেলটিকে মার্কেটে রিলিজ করা হয় । 4/64 জিবি মডেলটির বাজার মূল্য ৳14,999 টাকা । ফোনটির সাথে থাকছে এক বছরের জন্য সার্ভিস ওয়ারেন্টি । এই বাজেটের মধ্যে ফোনটির পারফরম্যান্স জাস্ট ওয়াও । ডিভাইসটিতে আলাদা তিনটি ভেরিয়েন্ট এর মেমোরি পারফরম্যান্স দেখা যায় । আমরা সবাই জানি যে মেমোরি পারফরমেন্সের উপর ডিপেন্ড করে স্মার্ট ফোনের প্রাইস আলাদা আলাদা ভবে নির্ধারণ করা হয় । এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রেও ঠিক সেরকম ভাবেই প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে । আপনি আপনার পছন্দমত অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল পাবে স্মার্টফোনটি হাতের মুঠোয় নিয়ে নিতে পারবেন ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads