বর্তমান ব্রান্ডগুলোর মধ্যে স্যামসাং খুবই জনপ্রিয় একটি ব্র্যান্ড । আর যার কারণে তাদেরকে নতুন নতুন মডেল উদ্ভাবন করতে হয় । স্যামসাং কোম্পানিটি আরো অনেক আগে থেকেই তাদের গ্রাহকদের চাহিদা মিটিয়ে নিত্য নতুন মডেল মার্কেটে রিলিজ করে থাকে । 28 জুন, 2021 মার্কেটে রিলিজ করা হয় Samsung Galaxy M32 নিউ মডেল । একটু কম দামের ভিতরে যারা ভালো মানের স্মার্টফোন আশা করে থাকেন তাদের জন্য এই মডেলটি মার্কেটের সেরা হতে পারে । মার্কেটে রিলিজ হওয়ার পর থেকেই এই স্মার্টফোনটি সম্পর্কে অনেকেই ভাল মন্তব্য করেছে । স্যামসাংয়ের নতুন মডেলটি অন্যরকম এক ফিচারে সজ্জিত মার্কেটপ্লেসে । মোবাইলটিতে চোখজুড়ানো ডিসপ্লের সাথে বডিতে দেওয়া হয়েছে নজরকাড়া ডিজাইন । পারফরমেন্সের জন্য এই মডেলের জনপ্রিয়তা অত্যধিক বেশি ।মোবাইলটি সম্পর্কে জানতে হলে চোখ রাখুন রিভিউতে ।
মোবাইল কিনার নতুন মার্কেটপ্লেস
নেটওয়ার্ক কানেকশন
মোবাইলটি দিয়ে খুব সহজেই উন্নতমানের নেটওয়ার্ক উপভোগ করা যাবে । মডেলটি দিয়ে থ্রিজি নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে । মোবাইলটিতে ফোরজি নেটওয়ার্ক এর ভার্সন রয়েছে 1,3,5,8,20,38, 40,41 । থ্রিজি নেটওয়ার্কে সর্বোচ্চ প্রতি সেকেন্ডে 42.5 এবং সর্বনিম্ন 5.76 এমবিপিএস নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে । মোবাইলটি দিয়ে ন্যানো সিম এর সাথে ডুয়েল সিম ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়েছে । দেশের সর্বত্র এরিয়া জুড়েই উন্নত মানের নেটওয়ার্ক ফোরজি ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে । ইন্টারনেট এবং নেটওয়ার্ক কানেকশন ছাড়া এই প্রযুক্তির সময়ে আপনি হয়তো অনেকটাই পিছিয়ে পড়বেন । তাই ভালো মানের নেটওয়ার্ক স্পীড এবং ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করার জন্য এই মোবাইলটির জুড়ি নেই । তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলো ব্লুটুথ , জিপিএস , ওয়াইফাই হটস্পট ব্যবহার করে গেলেও পাওয়া যাবেনা এফএম রেডিও এবং এনএফসি উপভোগ করার সুযোগ ।
এলসিডি এবং ডিসপ্লে সাইজ
মোবাইলটিতে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে টাইপ ব্যবহার করা হয়েছে । যার সাইজ 6.4 ইঞ্চি । মোবাইলটিতে রেজোলেশন সাপোর্ট করবে 1080×2400 পিক্সেল । মোবাইলটির এলসিডিতে 16M রং প্রদর্শন করা হয়েছে । 411 পিপিআই ডেনসিটি রয়েছে । মোবাইলটিতে এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 ব্যবহার করা হয়েছে । ডিসপ্লের ধরনে সুপার এমোলেড ব্যবহার হয়েছে যেটা শুনে অনেকেই বুঝতে পারবেন এলসিডি প্যানেলটি অনেকটাই উন্নত এবং মানসম্মত । টার্চ স্ক্রিনে রয়েছে 90 হার্জের রিফ্রেশ রেট । 90 হার্জের রিফ্রেশ রেট থাকার কারণে টাচস্ক্রিন অনেকটাই দ্রুত এবং তাড়াতাড়ি কাজ করতে সক্ষম । ফুল এইচডি রেজুলেশন থাকার কারণে যেকোন ভিডিও ভালোভাবে রেকরডিং এবং প্লে করা যাবে । অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি ডিসপ্লেটিতে আমরা পেয়ে যাবো মাল্টিটাচ ব্যবহারের সুবিধা । ডিসপ্লের জন্য এই মোবাইলটি অনেকটাই জনপ্রিয় এবং খ্যাত ।
বডি ডিজাইন
মোবাইলটির দৈর্ঘ্য 159.3 এবং প্রস্থ 8.4 মিলিমিটার । মোবাইলটি ওজনে প্রায় 196 গ্রাম । ওজনে হালকা হওয়ায় মোবাইলটি নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হবে না । মোবাইলটিকে কালো এবং নীল রঙে পাওয়া যাবে । বডিবিল্ডারে রয়েছে কর্নিং গরিল্লা গ্লাস প্রটেকশন । অনেক সময় দেখা গেছে আমাদের হাত থেকে পড়ে গিয়ে আমাদের স্মার্টফোন অথবা ডিভাইসগুলো ভেঙে যায় । কিন্তু এই মোবাইলটির বডিতে রয়েছে কর্নিং গরিল্লা গ্লাস প্রটেকশন । যার কারনে স্বল্প আঘাতে ভেঙ্গে যাওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কম । স্মার্টফোনের বামপাশে থাকছে মেমোরি এবং সিম কার্ড স্লট অপরদিকে ডান পাশে রয়েছে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ভলিউম বাটন । বডির নিচের দিকে রয়েছে 3.5 এম এম হেডফোন জ্যাক এবং লাউড স্পিকার এর সুবিধা । স্মার্টফোনটিকে আবদ্ধ করা হয়েছে প্লাস্টিকের ফ্রেমে । বডির পিছনে দেওয়া হয়েছে খুবই ভালো মানের ফিনিশিং ।
ক্যামেরা পারফরম্যান্স
ছবি তোলার জন্য বর্তমানে মোবাইলফোন অত্যন্ত জনপ্রিয় । Samsung Galaxy M32 মডেলটি দিয়ে সুন্দর ছবি তোলা যাবে । ছবি তোলার জন্য ব্যাক ক্যামেরায় অর্থাৎ 64+8+5+5 মেগাপিক্সেলের 4 টি ক্যামেরা । সেলফি তোলার জন্য ফ্রন্ট ক্যামেরা 20 মেগাপিক্সেল এর একটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে । মোবাইলটি দিয়ে ফুল এইচডি ভিডিও দেখা যাবে 1,080 পিক্সেলে । তার সাথে ব্যাক ক্যামেরার নিচে যুক্ত করা হয়েছে একটি আকর্ষণীয় এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট । প্রাইমারি ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে খুবই ভালো মেগা পিক্সেলের 4 টি ক্যামেরা । স্যামসাংয়ের প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই আমরা কোয়াড ক্যামেরা কালেকশন দেখতে চাই । তবে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভাল লেগেছে যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে স্মার্টফোনটির সামনের ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে 20 মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা । প্রাইমারি এবং সেলফি ক্যামেরা দুটো দিয়েই 1080 পিক্সেলে যেকোন ভিডিও রেকোডিং করা যাবে ।
স্টোরেজ / রেম /রোম
কম্পিউটার এবং ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ক্যাবল দিয়ে রেম এবং রোম বাড়ানো যায় । মোবাইলের ক্ষেত্রেও ক্যাবল দিয়ে রেম এবং রোম বাড়ানো যায় । কিন্তু, আপনি কি কখনো দেখেছেন ? অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি । এটা নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে আমিও জানতাম না । এই মোবাইলটি দিয়ে ওটিজি ক্যাবল দিয়ে রেম এবং রোম বাড়ানো যায় । মোবাইলটিতে এক্সটার্নাল স্তোরেজ 4/6 জিবি এবং ইন্টার্নাল স্তোরেজ 64/128 জিবি রয়েছে । স্টোরেজ পারফরম্যান্স ভালো থাকার কারণে যে কোন সফটওয়্যার এবং অ্যাপস এই মোবাইল দিয়ে ব্যবহার করা যাবে । মেমোরি পারফরম্যান্স ভালো থাকার কারণে স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার সময় কখনো হ্যাং এর মুখোমুখি হতে হবে না । তবে আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো মেমোরি স্টোরেজ বাড়িয়ে নিতে পারবেন ওটিজি ক্যাবল দিয়ে ।
সিকিউরিটি
মোবাইলফোন অন্যের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এর সুরক্ষা হিসেবে আমরা বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করি । এই মোবাইলটিতেও সিকিউরিটি অপশন রয়েছে । মোবাইলটির সাইড মাউন্টেডে ব্যবহার করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । যার শনাক্তকরন নির্ভূল এবং সঠিক । ফেইস আনলকিং সিস্টেম এর সুবিধা তো থাকছেই । বর্তমান সময়ে সিকিউরিটি সিস্টেম গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি পদক্ষেপ হলো মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । সেন্সরটি হচ্ছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । ফিঙ্গারপ্রিন্ট
সেন্সরটি আন্ডার ডিসপ্লেতে থাকার কারনে ব্যবহারকারী খুব সহজেই এটিকে ব্যবহার করতে পারবে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি খুবই দ্রুত কাজ করবে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি আমার কাছে অনেকটাই ভাল লেগেছে তার কারণ হলো ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি অনেকটাই দ্রুত কাজ করে থাকে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এটি ছাড়াও আরও রয়েছে এক্সিলারোমিটার ,
প্রক্সিমিটি , কম্পাস এর মতো জনপ্রিয় পদক্ষেপ ।
ব্যাটারি পারফরম্যান্স
মোবাইলটিতে লিথিয়াম নন টাইপ হাই কোয়ালিটির ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে । মোবাইলটিতে 5000 mAh ব্যাটারি পাওয়ার রয়েছে । ব্যাটারিটি 25W দ্রুত চাজ হবে । ব্যাটারিটিতে তারবিহীন চার্জিং ব্যবস্থা রাখা হয় নি । স্মার্টফোনে তারবিহীন কোন চার্জিং সিস্টেম এর ব্যবস্থা রাখা হয়নি । ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম
ব্যবহার করা হলে স্মার্টফোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেক গর্জিয়াস রূপ ধারণ করতে পারতো । যাইহোক অনেক সময় কিন্তু আমরা দেখতে পারি লক্ষণগুলো ভালো হওয়ার কারণেও ব্যাটারি ব্যাকআপ মোটামুটি মানের হওয়ার কারণে মোবাইলটিকে দীর্ঘক্ষন ব্যবহার করা যায় না । কিন্তু এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রে তেমন কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না বলে আমি আশা করি । স্মার্টফোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেকটাই ভালো যার কারণে স্মার্টফোনটিকে দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা যাবে ।
গেমিং পারফরম্যান্স কেমন করবে ?
গেমিং পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটি কেমন হবে এই ধারণাটি অনেকের মধ্যেই জন্মে নিয়েছে ইতিমধ্যেই । গুগল প্লে স্টোর থেকে অনলাইন জগতের গেম গুলো ইন্সটল করা যাবে ঠিক মোটামুটি ভালো মুভমেন্ট এর মাধ্যমে খেলাও যাবে কিন্তু পাওয়া যাবেনা হাই কোয়ালিটির গ্রাফিক্স ডিজাইন । গ্রাফিক্স ডিজাইন সহকারে এই অনলাইন গেম গুলো খেলা যাবে না ভালো ভাবে । তবে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে পাবজি এবং ফ্রী ফায়ার গেম গুলো ভালোভাবে খেলা যেতে পারে ।
অনলাইন থেকে অর্ডার করা যাবে ?
অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য আমরা প্রায় সকলেই এখন আগ্রহী । কমবেশি প্রায় সবাই আমরা অনলাইন থেকে স্মার্ট ফোন অর্ডার করে থাকি । এই
স্মার্টফোনটিকে আমরা চাইলেই অনলাইন থেকে অর্ডার করতে পারবো খুব সহজে । তবে অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য আপনাকে অবশ্যই অনেক সচেতন হতে
হবে । যদিও এই স্মার্টফোনটি আমাদের দেশীয় পণ্য তাহলে খুব সহজেই কিন্তু আমরা দেশের যেকোন মার্কেটপ্লেসে এই মোবাইলটি পেয়ে যাবো ।
মোবাইলটির বাংলাদেশি মূল্য
মোবাইলটিকে বাংলাদেশের মার্কেটে অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল দুরুপেই পাওয়া যায় । 6/128 জিবি স্টোরেজের এই মোবাইলটির অফিসিয়াল প্রাইস ৳22,990 টাকা । এখন আমাদের অনেকের ভিতরে প্রশ্ন জাগতে পারে এত দাম দিয়ে মোবাইলটি কেনা উচিত হবে কিনা ? হ্যাঁ , আপনি যদি একটু কম দামের ভিতরে একটা ভালো মানের স্মার্টফোন ব্যবহার করার জন্য আশা করে থাকেন তাহলে এই স্মার্টফোনটি আপনার মধ্যে মার্কেটের সেরা হতে পারে । এই স্মার্টফোনটি স্বল্পমূল্যের ভিতরে থাকা সত্ত্বেও এখানে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত মানের পারফরম্যান্স ।
Wow
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন