দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে প্রায় প্রতিটি দেশেই শাওমির চাহিদা রয়েছে । সাধারণ মানুষ গুলোর মধ্যে শাওমি ব্যবহার করার ইচ্ছাশক্তি প্রবলটা অনেকটাই বেশি । মার্কেটে থাকা অন্যান্য মডেলগুলো থেকে এই মডেলদের চাহিদা মানুষের কাছে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে । শাওমি লাভারদের জন্য এমআই প্রতিনিয়ত এই মার্কেটে তাদের নিত্য নতুন মডেল যুক্ত করছে । শাওমি কোম্পানি রীতিমতোই আপডেট করে যাচ্ছে তাদের সিরিজগুলো । জুলাই, 2021 বাংলাদেশের মার্কেটে রিলিজ করা হয়েছে Xiaomi Mi 11 Lite । মার্কেটে রিলিজ হওয়ার পর থেকেই মোবাইলটি সম্পর্কে ভালোমতো মতবাদ জানিয়েছে ব্যবহারকারীরা ফোনটি মার্কেটে রিলিজ হওয়ার পর থেকেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সফল হয়েছে । ফোনটিতে দেওয়া হয়েছে নজরকাড়া এক ডিজাইন । মোবাইলটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে চোখ রাখুন রিভিউতে ।
হার্ডওয়্যার ডিজাইন
মোবাইলের ডিসপ্লেতে বড় পর্দার ডিসপ্লে সাইজ 6.55 ইঞ্চি ব্যবহার করা হয়েছে । মোবাইলটির ডিসপ্লেতে সুপার এমোলেড টাইপ এলসিডি ব্যবহার করায় মোবাইলটির টাচস্ক্রিন যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে কাজ করবে । মোবাইলটির রেজুলেশন টপিকে রয়েছে 1080×2400 পিক্সেল । মডেলটির পিপিআই ডেনসিটি রেট 402 । স্মার্টফোনটিতে 8 কোর এর মতো আকর্ষণীয় প্রসেসর রয়েছে । মোবাইলটির সিপিইউতে ব্যবহার করা হয়েছে octa-core(2×2.3 Ghz Kryo 470 Gold & 6×1.8 Ghz Kyro 470 silver) । জিপিইউ রয়েছে Adreno 618 । মোবাইলটিকে এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 এর আওতাভুক্ত রাখা হয়েছে । মোবাইলটিকে মার্কেটে কালো, গোলাপি এবং নীল কালারের মত আকর্ষনীয় রঙে পাওয়া যাবে । মোবাইলটির ফুল বডির ওজন 157 গ্রাম । ডিসপ্লে প্রটেকশন এর জন্য কর্নিং গরিলা গ্লাস 5 এর মত স্ট্রং গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে । ডিসপ্লে এবং অপারেটিং সিস্টেমের জন্য এই মোবাইলটির জনপ্রিয়তা রয়েছে ।
ক্যামেরা
মোবাইলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ট্রিপল রেয়ার ক্যামেরা । মোবাইলটির প্রাইমারি ক্যামেরায় 64 মেগাপিক্সেল,আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরায় 8 মেগাপিক্সেল এবং ম্যাক্রো ক্যামেরায় 5 মেগাপিক্সেল ব্যবহার করা হয়েছে । ফ্রন্ট ক্যামেরায় রয়েছে 16 মেগাপিক্সেল যা দিয়ে মনোরঞ্জক ছবি ক্যাপচার করা যাবে । ব্যাক ক্যামেরার সাথে যুক্ত রয়েছে এলইডি পানোরামা ডাবল ফ্ল্যাসলাইট । এইচডি ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে 1080 পিক্সেলে । ক্যামেরা পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটিতে পাওয়া যাবে আকর্ষণীয় সব ফিচার । এইচডিআর এবং পানোরামা মুডের মতো অন্যান্য ফিচার গুলো খুব সহজেই ব্যবহার করা যাবে । নাইট মুড এবং স্বল্প আলোতে ভালো মানের ইমেজ ক্লিক করা যাবে । প্রাইমারি ক্যামেরাগুলো দিয়ে খুব ভালো মানের ভিডিও রেকর্ডিং এবং দেখা যাবে । আন্ডার ডিসপ্লেতে ক্যামেরাগুলোর সেটিং কালেকশন খুবই ভালো
লেগেছে । ক্যামেরা তিনটেকে রাখা হয়েছে লম্বালম্বি আকারে ।
রেম এবং রোম
মোবাইলটির মেমোরিতে মাইক্রোএসডিএক্সসি কার্ড স্লট রয়েছে । মেমোরিতে 6 জিবি/ 8 জিবি রেম এবং 64 জিবি / 128 জিবি স্টোরেজর সুবিধা রাখা হয়েছে । ওটিজি ক্যাবল দিয়ে সুবিধামতো রেম ও রোম বাড়ানো যাবে । মোবাইল ফোন সম্পর্কে আমরা যারা ভাল জানি এবং যাদের অভিজ্ঞতা ভাল রয়েছে তারা কিন্তু একটি স্মার্টফোন কেনার পূর্বে সর্বপথমে দেখে নিবে স্মার্টফোনগুলোর মেমোরি পাপারফরম্যান্স । ডিভাইসের মেমোরি কোয়ালিটি ভালো থাকলে সেই স্মার্টফোনগুলো ফুল স্পিডে ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় । এই স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার জন্য আমাদেরকে মেমোরি পারফরমেন্সের উপর কোনো দ্বিধা দ্বন্দ্ব নেই । হ্যান্ডসেটের মেমোরি কোয়ালিটি খুবই ভালো এবং হাই কোয়ালিটি স্টরেজ থাকার কারণে যে কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে আপডেটের মাধ্যমে । মেমোরি পারফরমেন্সের জন্য এর মোবাইলটি আমাদের সকলেরই পছন্দ হয়ে থাকবে ।
ব্যাটারি পাওয়ার
মোবাইলটিতে নন রিমুভাল টাইপের মিডিয়াম কোয়ালিটির 4250mAh পাওয়ারের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে । 33W দ্রুত চার্জিং ব্যবস্থা রয়েছে । ব্যাটারি পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটির জনপ্রিয়তা সবার কাছে পরিচিত । একটি স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করে যদি সেটিকে দীর্ঘক্ষন চালানো না যায় তাহলে আমাদের কাছে কিন্তু অনেকটাই খারাপ লাগে এবং অনেক অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয় । কিন্তু এই মোবাইলটির ক্ষেত্রে তা দেখা যাবে না এখানে থাকছে ভালো মানের একটি ব্যাটারি পাওয়ার যেটিকে ফুল চার্জ করার পর আপনি চাইলে দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করতে পারবেন খুব সহজেই । স্মার্টফোনের ব্যাটারিটি ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেমের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি । এছাড়াও ব্যাটারিতে পাওয়া যাবে আলাদাভাবে উন্নত মানের ব্যাকআপ । এই মডেলটি ছাড়াও শাওমির অন্যান্য মডেলগুলোতে আমরা ব্যাটারি পারফরমেন্স ভালো দেখতে পাবো ।
সিকিউরিটি পদক্ষেপ
ব্যবহারকারী সুবিধার জন্য সাইড মাউন্টেডে সেট করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । যা নির্ভুল এবং সঠিকভাবে শনাক্তকরণে সাহায্য করবে । ফেইস আনলকিং সিস্টেম এর সুবিধাও পাওয়া যাবে । মাল্টিপল ফিঙ্গার সেন্সরটির উপস্থিতি আমরা কিন্তু প্রায় সব মোবাইলে দেখতে পাই হোক সেটি দামি স্মার্টফোন বা কম দামি মোবাইল । বর্তমান সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে এই মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর অবস্থানের রেয়ার মাউন্টেডে হওয়ায় একজন ব্যবহারকারী খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এটি ছাড়াও অন্যান্য সিকিউরিটি পদক্ষেপগুলো অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করতে অনেকটাই সক্ষম বলে মনে হয়েছে । সিকিউরিটি সিস্টেম গুলো ব্যবহার করে যে কেউই চাইলে তারে স্মার্টফোনটিকে অন্যের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে ।
নেটওয়ার্ক
উন্নতমানের নেটওয়ার্ক ফোরজি এর সাথে ডুয়েল সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে । মোবাইলটি দিয়ে 5G নেটওয়ার্ক এর অপশন রাখা হয়েছে । 2Gনেটওয়ার্কে সর্বনিম্ন 850 এবং সর্বোচ্চ 1800 স্পিডে প্রতি সেকেন্ডে নেটওয়ার্ক উপভোগ করা যাবে । 4G নেটওয়ার্কের ভার্সনগুলো হলো 1,2,3,4,5,7,8,12,17,20,28,32,38,40,41,66 । ওয়াই ফাই ডিরেক্ট, এফএম রেডিও , হটস্পট এবং ব্লুটুথ এর মত ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক গুলো ফুলস্পিডে চালানো যাবে । ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক কানেকশনের মতো উন্নত মানের নেটওয়ার্ক স্পিড ব্যবহার করা হয়েছে এই মোবাইলটিতে । যদিও আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত 5 জি নেটওয়ার্ক কানেকশন চালু হয়নি । তবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু হলে এই মোবাইলটি দিয়ে উপভোগ করা যাবে । যেকোনো জায়গায় উন্নত মানের নেটওয়ার্ক এবং রয়েছে নাম্বার ওয়ান 1 নেটওয়ার্ক স্পিড ব্যবহার করা যাবে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করার সুবিধার পাশাপাশি ।
গেমিং পারফরম্যান্স কেমন হবে?
মোবাইলটিতে গেমিং প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে যার কারণে মোবাইলটি দিয়ে অনায়াসেই যে কোন অনলাইন গেম উন্নত মানের গ্রাফিক্সের সাথে গেম প্লে করা যাবে । তাছাড়া মোবাইলটিতে 8 জিবি রেম এবং 128 জিবি রোম ব্যাবহার করায় মোবাইলটি দুর্দান্ত গেমিং পারফরম্যান্স দিবে । গেমিং পারফরমেন্স জন্য এই মোবাইলটি পারফেক্ট বলেই মনে হয়েছে । হাই কোয়ালিটি গেমিং সার্ভিসের পাশাপাশি পাওয়া যাবে লো-কোয়ালিটির মধ্যে থাকা গেমগুলো । অনলাইন গেম গুলো যেমন ফ্রী ফায়ার এবং তাদের মত উন্নত শালী গেমগুলো খেলা যাবে হাই কোয়ালিটি এবং ভালো মানের গ্রাফিক্স এর সাথে । ব্যাটারি পারফরমেন্সে এবং মেমরি স্টোরেজ ভালো থাকার কারণে গেমগুলোর মুভমেন্ট ভালো পাওয়া যাবে । গেমগুলো খেলার জন্য যারা এই স্মার্টফোনটিকে টার্গেট করেছে ভালো মানের ফিচার দেওয়ার জন্য এই স্মার্টফোনটি অনেকটাই যোগ্য ।
বাংলাদেশে মোবাইলটির প্রাইস কত?
উন্নতমানের এই মোবাইল ফোনটি দেশের মার্কেটে সুলভ মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে । মডেলটিকে পাওয়া যাচ্ছে অফিশিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল দুই রুপেই । 6/128 জিবি স্টোরেজের মডেলটি পাওয়া যাচ্ছে ৳29,999 টাকায় । এই মডেলটির আনঅফিসিয়াল প্রাইস ৳29,400 টাকা । স্মার্টফোনটি অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল প্রাইস অনেকটাই কাছাকাছি । তাই আমার পক্ষ থেকে অফিশিয়ালি স্মার্টফোনটি ক্রয় করার জন্য মতামত রইল । আবার অনেকেই হয়তো মনে করতে পারে যে এত টাকা দিয়ে এই স্মার্টফোনটি ক্রয় করে ভালো মানের পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে কিনা ? হ্যাঁ অবশ্যই একটি কথা আমরা সকলেই হয়তো জানি জিনিস যেটা ভালো দাম তার একটু বেশি হয়ে থাকে । যেহেতু এই স্মার্টফোনটি একটু ভালো মানের মধ্যে রয়েছে সেজন্য এই স্মার্টফোনটিকে একটু বেশি টাকা খরচ করে ব্যবহার করতে হবে । বেশি টাকা খরচ করলেও আপনি পেয়ে যাবেন একটি ভালো মানের স্মার্টফোন ব্যবহার করার সুযোগ ।
অনলাইন থেকে অর্ডার করার সুযোগ রয়েছে কিনা ?
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল কিছুই আমরা এখন অনলাইন থেকে অর্ডার করে নিতে পছন্দ করি । ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে ই-কমার্স এর মাধ্যমে আমরা যেকোনো পণ্য অথবা এই স্মার্টফোন ঘরে বসেই অনলাইন থেকে অর্ডার করতে পারব । অন্যান্য স্মার্টফোনের মতো এই স্মার্টফোনটি কেউ যদি আপনি অনলাইন থেকে অর্ডার করতে চান তাহলে সেই সুযোগ অবশ্যই রয়েছে । অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রথমে খুঁজে নিতে হবে এমআই কোম্পানির অফিসিয়াল পেইজটি যেখানে শাওমি এবং রেডমির প্রায় প্রতিটা স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলো আপনি চাইলেই অর্ডার করতে পারবেন । আপনিও চাইলে এই স্মার্টফোনটিকে অনলাইন থেকে অর্ডার করতে পারবেন খুব সহজেই । অনলাইন থেকে অর্ডার এর জন্য আপনাকে কিছু টাকা বেশি খরচ করতে হতে পারে ।
Good mobile
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন