বর্তমান মার্কেটের ফাস্টেস্ট মডেল গুলোর মধ্যে শাওমির পারফরর্মেন্স অতুলনীয় । তাদের রিলিজ করা মডেলগুলো মার্কেটে মানুষের কাছে অনেকটাই চাহিদা দেখা যায় । তাদের স্মার্টফোনগুলোকে হাই কোয়ালিটির পাশাপাশি লো কোয়ালিটির মডেলের আওতায় রাখার কারণে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই ডিভাইসগুলোকে ব্যবহার করতে পারে । কোম্পানিটির প্রতি মানুষের একটি আলাদা চাহিদা থাকার কারণে আমরা দেখতে পাই ব্র্যান্ডটি মার্কেটের নতুন নতুন মডেল আপডেট করে থাকে । জুন, 2021 মার্কেটে রিলিজ করা হয় Xiaomi Redmi Note 10 pro max মডেলটিকে । বর্তমান মার্কেট গুলোতে এমআই কোম্পানির নতুন আকর্ষণ নোট সিরিজের রেডমি নোট 10 প্রো ম্যাক্স আমরা যারা মিডিয়াম দামে হাই কোয়ালিটির স্মার্টফোন কিনতে চাচ্ছি এই মডেলটি হতে পারে তাদের জন্য সেরা । আজকে আমরা জানার চেষ্টা করবো এই নতুন স্মার্টফোন এর সুবিধা ও অসুবিধা দিকগুলো ।
আকর্ষণীয় বডি ডিজাইনের সাথে রয়েছে বড় মাপের এলইডি সাইজ 6.67 ইঞ্চি । সুপার আ্যামোলেড টাইপ টাচস্ক্রিন ব্যবহার করার কারণে যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে টার্চ দ্রুতগতিতে কাজ করবে । বেজেল লেস পাঞ্চ হোল ডিসপ্লে রয়েছে । টাচস্ক্রিনে 16M কালার সাপোর্ট করবে।
ডিসপ্লে রেজুলেশন 1080×2400 পিক্সেল এবং পিক্সেল ডেন্সিটি রয়েছে 395 পিপিআই । অ্যাসপেক্ট রেটিও 20:9 এবং স্ক্রীনরেটিও 85.7% । অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন 11 এর আওতাভুক্ত । মোবাইলটির বডির প্রটেকশন হিসেবে শক্তিশালী কর্নিং গরিল্লা গ্লাস 5 রয়েছে । স্মার্টফোনটির দৈর্ঘ্য 164.5 মিমি, প্রস্থ 76.5 মিমি এবং পুরুত্ব রয়েছে 8.1 মিলিমিটার । হ্যান্ডসেটটিকে নীল এবং নীল রঙে পাওয়া যাবে । মোবাইলটির ওজন 192 গ্রাম । মডেলটি অনেকটা স্লিম এবং ওজনে হালকা হওয়ায় হাতে নিয়ে ব্যবহার করতে সুবিধা হবে । মোবাইলটিতে চিপসেট Qualcomm SM7150 Snapdragon 732G, সিপিইউ রয়েছে Octa-Core (2×2.3 GHz kryo 470 Gold & 6×1.8 GHz kryo 470 Silver) এবং জিপিইউ রয়েছে Adreno 618 ।
একটি স্মার্ট ফোনের মেমোরি পারফরম্যান্সকে সেই মোবাইলটির মেরুদন্ড বলা হয়ে থাকে । তার কারণ হলো স্মার্ট ফোনের মেমোরি পারফরম্যান্স যদি খারাপ হয়ে থাকে তাহলে আপনি সেই মোবাইলটির দিয়ে ভালো মানের নেটওয়ার্ক কানেকশন ব্যাবহার করতে পারবেন না এবং প্রায় দেখা যাবে যে কোন অ্যাপ এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করার সময় হ্যাং অথবা লেক হয়ে যাওয়ার । মোবাইলটির মেমোরিতে মাইক্রোএসডিএক্সসি ডেডিকেটেড স্লট ব্যবহার করা হয়েছে । মেমোরিতে 6/8 জিবি রেম এবং 64/128 জিবি রোম রয়েছে । ওটিজি ক্যাবল দিয়ে রেম এবং রোমকে প্রয়োজনমতো বাড়িয়ে নেওয়ার সুবিধা রয়েছে । এই স্মার্টফোনটির মেমোরি পারফরম্যান্স আমরা কিন্তু খুবই ভালো দেখতে পাই কিন্তু ডেডিকেটেড ভার্শন অনেকটাই পুরনো । এই স্মার্টফোনটিতছ পুরনো ভার্সনের ডেডিকেটেড স্লট আসলে অনেকটা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল গ্রাহকদের কাছে ।
Xiaomi Redmi Note 10 pro max মোবাইলটিতে কোয়াড ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে । যার প্রাইমারি ক্যামেরায় 108 মেগাপিক্সেলের ওয়াইড ক্যামেরা, আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরায় রাখা হয়েছে 8 মেগাপিক্সেল, ছবি স্পষ্ট ভাবে ওঠার জন্য ম্যাক্রো ক্যামেরায় 5 মেগাপিক্সেল এবং ডেপ্ট ক্যামেরায় 2 মেগাপিক্সেল ব্যবহার করা হয়েছে । ছবি তোলার ফিচারে রয়েছে ডিজিটাল জুম, অটো ফ্লাশ, এইচডিআর মোড ইত্যাদি । প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে এলইডি ডুয়েল ফ্লাশলাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে । প্রাইমারি ক্যামেরার রেজুলেশন 12000×9000 । সামনের ক্যামেরায় সেলফি তোলার জন্য 16 মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা রয়েছে, যার রেজুলেশন 4616×3464 পিক্সেল । প্রাইমারি ক্যামেরায় ভালো এবং উন্নতমানের পিক্সেল রেজুলেশন থাকার কারণে যে কোন ছবি ক্যাপচার করার ক্ষেত্রে দারুণ পারফর্মেন্স দিবে । সেলফি এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা ফিচার ও কিন্তু খুবই ভালো যেটা আশা করি সকলের কাছে ভালো লাগবে ।
ডুয়েল সিমের সাথে ব্যবহার করা যাবে ফোরজি নেটওয়ার্ক । থ্রিজি নেটওয়ার্কে প্রতি সেকেন্ডে সর্বনিম্ন 850 এমবিপিএস এবং সর্বোচ্চ 2100 স্পিড উপভোগ করা যাবে । ফোরজি নেটওয়ার্কে প্রতি সেকেন্ডে 42.2 এমবিপিএস স্পিড চালানো যাবে । ফোরজি ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে 1,3,5,7,8,40,41 । 5.1 ভার্সনের ব্লুটুথ, 802.11 গতির ওয়াইফাই, হটস্পট এবং জিপিএস ছাড়াও বিভিন্ন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক গুলো চালানো যাবে । ফাস্টেস্ট নেটওয়ার্ক কানেকশন গুলো কিন্তু খুব সহজেই ব্যবহার করা যাবে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে । 5.1 মডেলের ব্লুটুথ , জিপিএস , wifi-direct , ওয়াই ফাই হটস্পট তবে তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে ব্যবহার করার সুবিধা থাকছে না এনএফসি । নেটওয়ার্ক স্পিড খুব ভালোভাবেই সাপ্লাই করে থাকবে তবে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে সর্বোচ্চ ফোরজি নেটওয়ার্ক উপভোগ করা যাবে ।
নন রিমুভেবল লিথিয়াম পলিমার টাইপ 5200 mAh মিডিয়াম কোয়ালিটর ব্যাটারি রয়েছে । ব্যাটারিটি 18W দ্রুত চার্জ হবে । মোবাইলটির ব্যাটারীতে ওয়্যারলেস
চার্জিং সিস্টেম রাখা হয়নি । মোবাইলের ব্যাটারিটি ফুল চার্জ হতে 75 মিনিট সময় নিবে । ফুল চার্জে 13 ঘন্টা নেট চালানো যাবে এবং ভিডিও প্লেব্যাক দেখা যাবে 16 ঘন্টা । প্রক্সিমিটি এক্সসিলেমিটার এবং কম্পাস এর মত নির্ভুল সিকিউরিটি ব্যবস্থা রয়েছে । ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য সাইড মাউন্টেডে সেট করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । ব্যাটারির গিভ ওয়ে পাওয়ার কিন্তু অন্যান্য মডেল গুলো থেকে অনেকটাই আলাদা এবং উন্নত । ব্যাটারি পারফরম্যান্সের পাশাপাশি এই স্মার্টফোনটিতে থাকছে ভালো মানের এবং অদ্বিতীয় ভাবে শনাক্ত করার জন্য সিকিউরিটি পদক্ষেপ । সিকিউরিটি পদ্ধতিগুলো ডিজিটাল তার মধ্যে রয়েছে এক্সিলারোমিটার , প্রক্সিমিটি , মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম ইত্যাদি ।
অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল দুই ভাবেই দেশের বাজারে মডেলটিকে পাওয়া যাচ্ছে । 6/128 জিবি অফিসিয়াল মূল্য ৳28,999 এবং আনঅফিসিয়াল মূল্য ৳25,500 টাকা । অপরদিকে 8/128 জিবি অফিশিয়াল মূল্য ৳ 30,999 টাকা ও আনঅফিসিয়াল মূল্য ৳29,000 টাকা । মার্কেটে অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল ভাবে স্মার্টফোন তৈরিতে চাওয়ার কারণে আপনি চাইলে কিন্তু খুব সহজেই আপনার পছন্দ করা এ স্মার্টফোনটি বেছে নিতে পারবেন । আপনি চাইলে অফিশিয়ালি স্মার্টফোন কিনতে পারবেন আবার চাইলে আনঅফিসিয়ালি স্মার্টফোন কিনতে পারবেন । তবে আগেই বলে রাখি অফিশিয়ল স্মার্টফোনটি ক্রয় করার জন্য আপনাকে কিছু টাকা বেশি খরচ করতে হবে । অফিশিয়ল স্মার্টফোনগুলোর সুবিধা আমরা সকলেই হয়তো জানি আবার অপরদিকে আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোনগুলোর অসুবিধা সকলেই জানি । অফিশিিয়াল স্মার্টফোনগুলো ব্যবহারের অনুমোদন আপনাার দেশে থাকবেে কিন্তুু আনঅফিসিয়াল স্মার্টফোনগুলোর অনুমোদন দেশে দেওয়া হয় না এক্ষেত্রে আপনি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন ।
গেম খেলার জন্য আমাদের অনেকেরই টার্গেট একটি ভালো মানের স্মার্টফোন । তবে সব ধরনের স্মার্টফোন অনলাইন গেম গুলো খেলার জন্য সামর্থ্য রাখে না । তবে আপনি যদি গেম খেলার জন্য এই স্মার্টফোনটিকে বেছে নেন তাহলে আপনি অনেকটা ভালো পারফরমেন্স পেতে পারেন । অনলাইন জগতের প্রতিটি গেমস যেমন ফ্রী ফায়ার পাবজি এবং অন্যান্য গেমগুলো ভালো মানের গ্রাফিক্সের সাথে ফুল স্পীডে খেলার সুযোগ রয়েছে । ব্যাটারি পারফরম্যান্স ভালো হওয়ার কারণে দীর্ঘক্ষন গেম প্লে করার সুযোগ তো আছেই । অনলাইন গেম গুলো ভালো গ্রাফিক্স এর সাথে খেলার সময় কখনোই হ্যাং করার সম্ভাবনা নেই । ভিডিও রেজুলেশন খুবই ভালো থাকার কারণে ফুল এইচডি গ্রাফিক্স সাপোর্ট করবে এই মোবাইলটিতে । যারা প্রফেশনালভাবে গেমপ্লে করার জন্য স্মার্টফোন খুজছেন তাদের জন্য এই মডেলটি মার্কেটের সেরা হতে পারে ।
প্রযুক্তিগত এই ডিজিটাল সময়ে আপনি চাইলে ঘরে বসেই আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যটি অর্ডার করতে পারবেন । দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে মানুষের সুবিধা পাওয়ার রাস্তা কিন্তু ততোই বাড়ছে । তাই মানুষ এখন মার্কেটপ্লেসে না গিয়েও ঠিক ঘরে বসেই চাইলেই কিন্তু যেকোনো ধরনের পণ্য এবং পাশাপাশি আপনি চাইলে কিন্তু রেডমি নোট 10 প্রো ম্যাক্স এই মোবাইলটিকে অনলাইন থেকে ক্রয় করতে পারবেন । ইতিমধ্যে অনেকে হয়তো অনলাইন থেকে মোবাইলটি অনেকেই অর্ডার করেছেন আবার যারা হয়তো এখনো জানেন না যে অনলাইন থেকে কিভাবে অর্ডার করবেন তাদের জন্য অবশ্যই একটি কথা হল এমআই কোম্পানির একটি অফিশিয়াল পেজ বাংলাদেশের রয়েছে সেখানে এমআই ব্র্যান্ডের যেকোনো মডেল পাওয়া যাবে সাথে এই মডেলটিকেও । অনলাইন থেকে ওয়েবসাইট নির্বাচন করার জন্য অনেকটাই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে না হলে ঠকে যাওয়া সম্ভব না কিন্তু অনেক বেশি । অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য আপনাকে কিন্তু কিছুটা বেশি টাকা খরচ করতে হতে পারে ।
স্মার্টফোনটির দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব এটিকে মিডিয়াম কোয়ালিটি প্রাইস এর মধ্যে রাখা হয়েছে । মোবাইলটিকে মিডিয়াম প্রাইস এর মধ্যে রাখা হয়েছে সেটা তো বলা যায় এটির পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালই হয়ে থাকবে । তবে এই স্মার্টফোনটির দ্বারা উন্নত পারফরম্যান্স দেওয়া কখনোই সম্ভব হবে না । আমরা যারা মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটির ভিতরে একটি ভাল মানের স্মার্টফোন খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের জন্য এই মোবাইলটি অবশ্যই মার্কেটের সেরা বলে আমি মনে করি । এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে যে এত দাম দিয়ে মোবাইলটি কেনা উচিত হবে কিনা ? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি অবশ্যই বলব মোবাইলটির মূল্য যেমন পারফরম্যান্স ঠিক তেমনি । তোর মোবাইলটির পারফরম্যান্স ঠিক যেমন রয়েছে সেজন্য এটিকে ঠিক তেমন মূল্য দিয়েই কিনতে হবে আমাদেরকে । আমরা যদি ভালো মানের পারফরর্মেন্স আশা করে থাকি তাহলে এই মোবাইলটি আমাদের জন্য ভালো কিছু দিতে পারবে ইনশাল্লাহ ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন