কম বাজেটের মধ্যে ভালো পারফরর্মেন্স এর মোবাইল ফোন উদ্ভাবন করার জন্য সিম্ফোনি কোম্পানির জনপ্রিয়তা ব্যাপক । সিম্ফোনি কোম্পানি তাদের মার্কেটপ্লেসে নিত্য নতুন স্মার্টফোন রিলিজ করার মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে স্বল্পমূল্যের ভিতরে ভালো মানের স্মার্টফোন । তাদের উদ্ভাবিত মডেলগুলো বাজেটে অনেকটা সস্তা বলে তাদের কাস্টমার গুলো খুব সহজে তাদের প্রোডাক্ট গুলো হাতের নাগালে রাখতে পারে । সিম্ফোনি কোম্পানিটির হাত ধরেই মার্কেটে চলে আসলো Symphony Z33 । সব মিলিয়ে এই মোবাইলটি আমার কাছে পার্সোনাল ভাবে অনেকটাই ভালো লেগেছে । আমরা যারা খুবই কম বাজেটের মধ্যে ভালো মানের মোবাইল ফোন খুঁজে বেড়াচ্ছি এই মডেলটি তাদের কাছে হতে পারে সেরা । স্মার্টফোনটিতে আমরা কি কি ফিচার পাবো ? এখন তা জেনে নেওয়া যাক ।
বডি লুক এবং ডিজাইন
পাঞ্চ হোল স্টাইল এর বডি টাইপ এর পাশাপাশি রোমাঞ্চকর লুক দেওয়া হয়েছে সিম্ফোনির নতুন মডেলটিতে । বডির ডানপাশে ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন এর সাথে রয়েছে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বাটন । বামদিকে থাকছে মেমোরি এবং সিম কার্ড স্লট । মোবাইলটির নিচের দিকে থাকছে 3.5 এমএম হেডফোন জ্যাক এবং এর সাথে থাকবে লাউডস্পিকার এর সুবিধা । ফোনটির বডিতে কোন প্রটেকশন ব্যবহার করা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে কোম্পানি কর্তৃক কোন তথ্য প্রদান করা হয়নি । বডিতে খুব সহজেই দাগ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । আর এজন্য ব্যবহার করতে হবে ব্যাক কভার । 190 গ্রামের হালকা এই মোবাইলটিকে কালো , সবুজ , গোলাপি এবং নীল ভিন্ন চারটি কালারে মার্কেটে পাওয়া যাবে । স্পট ডেড বডি ডেকারেশন অনেকটা ঘোষনা দেয়ার কারনে আমরা ব্যাক সাইডে দেখতে পাবো আকর্ষণীয় এবং খুবই ভালো মানের পেটান আকৃতির ডিজাইন ।
মেমোরি পারফরম্যান্স
নতুন এই মোবাইলটির মেমোরি পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে বেশি না পাওয়া গেলেও বাজেট হিসেবে অনেকটা মিলিয়ে নেওয়ার মতো । একটিমাত্র ভেরিয়েন্ট টাইপে মোবাইলটিকে রিলিজ করা হয়েছে । ইন্টার্নাল মেমোরিতে 3 জিবি রেম এর পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে 32 জিবি রোম । হাই পারফরম্যান্সের অ্যাপস এবং সফটওয়্যার গুলো দারুন স্পিডে ব্যবহার করা যাবে । এছাড়া থাকছে ওটিজি ক্যাবল ব্যবহারের সুবিধা । ওটিজি ক্যাবল ব্যবহার করে আপ টু 128 জিবি মেমোরি পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নেওয়া যাবে । প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্যাদি এবং ডকুমেন্ট পর্যাপ্ত আকারে সংগ্রহ করে রাখা যাবে । সিম্ফোনি স্মার্টফোনগুলো তাদের বাজার সিগমেন্ট এর সাথে মেমোরি এবং স্টোরেজ পারফরম্যান্স প্রদান করে থাকে । তাদের অন্যান্য মডেল গুলোর মতো এই স্মার্টফোনটিতে আমরা স্বল্পমূল্যের ভিতরে একটু ভালো মানের মেমোরি পারফরম্যান্স পেয়ে যাবো ।
ডিসপ্লে কোয়ালিটি এবং প্লাটফর্ম
এইচডি রেজুলেশন 720×1600 পিক্সেলের আইপিএস এলসিডি ক্যাপাচিতিভ টাইপের এলসিডি প্যানেল রয়েছে । ডিসপ্লে প্যানেলটিতে 16.7 মিলি কালার সাপোর্ট করবে । মোটামুটি বড় 6.52 ইঞ্চি সাইজের একটি ডিসপ্লে প্যানেল রয়েছে । আমরা অনেকেই যারা গেম-প্লে এবং ভিডিও প্লেব্যাক দেখার জন্য বড় সাইজের মোবাইল পছন্দ করি এই মোবাইলটি তাদের জন্য হতে পারে সেরা । ডিসপ্লে ফিচারে পাওয়া যাবে মাল্টিটাচ এর সুবিধা । অপারেটিং সিস্টেমে গুগলের উদ্ভাবিত এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 ব্যবহার করা হয়েছে । ইউনিসক চিপসেটের পাশাপাশি রয়েছে 680 MHz এর জিপিউ । মিটারের মধ্যে থাকা এই স্মার্টফোনটিকে গুগোলের সর্বশেষ অথবা লেটেস্ট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে । ফোনটিতে রয়েছে খুবই ভালো মানের ব্রাইটনেস আমরা ইনডোরে একটু ভালো মানের ব্রাইটনেস পাওয়ার পাওয়া গেলেও আউটডোরে কিছুটা ঝামেলা হতে পারে ।
গেমিং পারফরম্যান্স কেমন ?
গেমিং পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটি হাই কোয়ালিটির ফিচার না দিতে পারলেও অনলাইন প্রথম সারির গেমগুলো মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটি ফিচার পাওয়া যাবে । ফ্রী ফায়ার এবং পাবজির মতো অনলাইন গেম গুলো উন্নত মানের গ্রাফিক্স এর সাথে খেলতে না পারলেও গেমিং প্রসেসর থাকার কারণে ভালোভাবেই গেম প্লে করা যাবে । গেমিং ব্যবহারে হ্যাং এর মুখোমুখি হতে হবে না বলে আশা করি । স্মার্টফোন থেকে গেমিং পারফরম্যান্স থাকা সত্ত্বেও এই স্মার্টফোনটি দিয়ে আমরা কিন্তু খুব ভালো মানের গ্রাফিক্স এর সাথে গেম প্লে করতে পারবো না । স্মার্টফোনটির মেমোরি পারফরম্যান্স কিছুটা কম হওয়ার কারণে অথবা মিডিয়াম পর্যায়ে থাকার জন্য অনলাইন গেম গুলো খেলার জন্য ততটা ফাস্টেস্ট স্পিডের মুভমেন্ট পাওয়া যাবে না ।
নেটওয়ার্ক কানেকশন
ফোনটির নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে 2 জি , 3 জি এবং ফাস্টেস্ট নেটওয়ার্ক 4 জি ব্যবহার করা হয়েছে । ন্যানো সিম এর পাশাপাশি আমরা এখানে পেয়ে যাবো হাইব্রিড ডুয়েল সিম ব্যবহারের সুবিধা । 3 জি নেটওয়ার্কে প্রতি সেকেন্ডে সর্বনিম্ন 850 এমবিপিএস এবং সর্বোচ্চ 2100 এমবিপিএস নেটওয়ার্ক স্পিড পাওয়া যাবে । 4 জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে দেশের সর্বত্র অঞ্চল জুড়েই । তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে পাওয়া যাবেনা এনএফসি ব্যবহারের সুবিধা । এছাড়া জিপিএস , ব্লুটুথ , ওয়াইফাই , হটস্পট ফুল স্পিডে ব্যবহার করা যাবে । অনেক দামি দামি স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করার সময় আমরা অনেকটা নেটওয়ার্ক প্রবলেম ফেস করে থাকি । কিন্তু অন্যান্য স্মার্টফোন গুলোর মতো এই স্মার্টফোনটি দিয়ে আমরা হাই স্পিড এর পাশাপাশি ব্রাউজিং করতে পারবো খুব সহজেই ।
এসে গেল নতুন ই-কমার্স ওয়েবসাইট মোবাইল ল্যাপটপ কেনার জন্য
ব্যাটারি এবং সিকিউরিটি সিস্টেম
স্মার্টফোনটির ব্যাটারি পারফরমেন্সে থাকছেন non-removable লিথিয়াম পলিমার টাইপের ব্যাটারি , যার ক্যাপাসিটিতে রয়েছে 5000 mAh মিডিয়াম শক্তিশালী পাওয়ার । এখানে পাওয়া যাবেনা তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম । মোবাইল ফোনটির সাথে যে চার্জার বক্স পাওয়া যাবে সেটি দিয়েই 15 ওয়াট গতিতে চার্জ দেওয়া সম্ভব । সিকিউরিটি সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর অবস্থান আন্ডার ডিসপ্লেতে রাখা হয়েছে । যার কার্যকরী ক্ষমতা অনেক দ্রুত এবং নির্ভুল । এছাড়াও পাওয়া যাবে ফেইস আনলকিং সিস্টেম , এক্সিলারোমিটার , প্যাটার্ন , গায়রো , কম্পাস এর মতো জনপ্রিয় সব সিকিউরিটি সিস্টেম । যেগুলো অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্তকরণে সহায়তা করবে ।
মোবাইলটিকে অনলাইন থেকে অর্ডার করা যাবে ?
কেনাকাটার জন্য বর্তমান এই সময়ে অনলাইনের ই-কমার্স সাইট অনেকটাই জনপ্রিয় । মানুষ এখন অনলাইন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে কেনাকাটা করতে দিনদিন আগ্রহী হয়ে উঠেছে । প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য সামগ্রী অনলাইন থেকে অর্ডার করা যাবে । সিম্ফনির নতুন এই মোবাইলটিও তার ব্যতিক্রম কিছু নয় । মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ দিয়ে অনলাইন থেকে এই মোবাইলটি অর্ডার করা যাবে । তবে অনলাইন থেকে অর্ডারে এই মোবাইলটির দাম একটু বেশি পড়তে পারে । সিম্ফোনি কোম্পানির প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোন চাইলে আমরা অনলাইন থেকে অর্ডার করতে পারবো ঘরে বসে । অর্ডার করার জন্য আমাদের ততটা খাটাখাটনির প্রয়োজন নেই । স্মার্টফোন গুলোর মান এবং স্পেসিফিকেশন দেখেগা অনলাইন থেকে অর্ডার করে নিজের হাতে পেয়ে যাব সর্বোচ্চ দুই দিনের মধ্যে । অনলাইন থেকে অর্ডার করার সুবিধা থাকার কারণ আমাদের কিন্তু মার্কেটে গিয়ে স্মার্টফোনগুলো অর্ডার করার প্রয়োজন পড়ে না ।
ক্যামেরা পারফরম্যান্স
প্রাইমারি ক্যামেরা পারফরম্যান্সের জন্য আন্ডার ডিসপ্লেতে থাকছে ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপ । ওয়াইড ফাংশনে থাকছে 13 মেগাপিক্সেল এবং ম্যাক্রো ক্যামেরা ফাংশনে রয়েছে 2 মেগাপিক্সেল । ক্যামেরা গুলো দিয়ে স্কিন ফ্লাশ , অটোজুম , এইচডিআর , ডিএসএলআর সহকারে আরো অনেক মুডে ইমেজ তোলা যাবে । মোবাইলটি দিয়ে যেকোনো ভিডিও এইচডি মুভি 720 পিক্সেলে রেকর্ডিং এবং দেখা যাবে । সেলফি তোলার জন্য ফ্রন্ট ক্যামেরায় থাকছে 8 মেগাপিক্সেল এর একটি রেয়ার ক্যামেরা । এখন আমরা হয়তো অনেকেই মনে করতে পারি স্মার্টফোনটি একটুও নিম্ন সিমেন্টের মধ্যে থাকার কারণে এখানে হয়তো কিছুটা ভালো মানের ক্যামেরার ছোঁয়া পাওয়া যাবে না । এই স্মার্টফোনটির প্রাইমারি ক্যামেরাগুলো দিয়ে খুব সহজে ভালো মানের ইমেজ এবং ভিডিও ক্যাপচার করতে পারব । স্বল্পমূল্যের ভিতরে আমরা স্মার্টফোনটি অন্যান্য পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ক্যামেরা পারফরম্যান্স পেয়ে যাব ।
রিলিজের সময় এবং প্রাইস
12ই সেপ্টেম্বর , 2021 অফিশিয়ালভাবে মোবাইলটিকে মার্কেটে প্রথমবারের মতো রিলিজ করা হয় । বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলো ছাড়াও সিম্ফোনির নতুন মডেলটিকে শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে । কম বাজেটের মধ্যে আমরা যারা ভালো কালেকশন পাওয়ার প্রত্যাশী তাদের জন্য এই মডেলটি হতে পারে সেরা । পারফরম্যান্স অনুযায়ী মোবাইলটির বাজেট ততটা বেশি নয় । বাংলাদেশের শোরুম এবং মার্কেটপ্লেসগুলোতে মোবাইলটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৳ 8,790 টাকা । এই স্মার্টফোনটিকে মার্কেটে অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল দুইভাবেই পাওয়া যাবে । তবে আপনি যদি ইন্ডিয়ার মার্কেটপ্লেসগুলোতে কে এই স্মার্টফোনটিকে ক্রয় করতে চান তাহলে কিন্তু কিছুটা কম টাকা খরচ করে ব্যবহার করতে পারবেন ফোনটিকে । তার কারণ হলো বিভিন্ন দেশের কারেন্সি এর উপর নির্ভর করে স্মার্টফোন গুলোর দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন