বডি স্টাইল এবং ডিজাইন
পাঞ্চ হোল বডি স্টাইল এর পাশাপাশি বডিতে থাকছে আকর্ষণীয় ফিনিশিং । স্মার্টফোনটির ডান পাশে রয়েছে ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন অপরদিকে বাম পাশে পেয়ে যাবো সিম কার্ড স্লট । মোবাইলটির সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বডির সামনে এবং পিছনে শক্তপোক্ত প্রটেকশন থাকছে কর্নিং গরিল্লা গ্লাস । আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে এই মোবাইলটিতে পাওয়া যাবে ধুলোবালি এবং পানিরোধক সিস্টেম । ফোনটি আকারে অনেকটাই মানিয়ে নেওয়ার মতো । 208 গ্রাম ওজনের এই মোবাইল ফোনটিকে পাওয়া যাবে কালো এবং সবুজ কালারে । বডির নিচের দিকে রয়েছে 3.5 এমএম হেডফোন জ্যাক এবং লাউডস্পিকার । পরে স্টাইল এবং ফিনিশিংয়ের জন্য এই মোবাইলটির ভূমিকা অনেক গভীর । হাতে নিয়ে ব্যবহার করার সময় কোন রকম অসুবিধা অনুভব করা যাবে না বলে আশা করা যাচ্ছে । কর্নিং গরিল্লা গ্লাস দিয়ে প্রটেক্টেড হওয়ার জন্য স্মার্টফোনটির বডি অনেকটাই মজবুত এবং টেকসই ।
স্টোরেজ এবং মেমোরি পারফরম্যান্স
মডেলটিকে দেশের মার্কেটগুলোতে দুইটি মাত্র মেমোরি পারফরমেন্স ভেরিয়েন্টে রিলিজ করা হয়েছে । ইন্টার্নাল মেমোরি রেম হিসেবে থাকছে 8 / 12 জিবি এবং রোম পারফরম্যান্সে রয়েছে 128 / 256 জিবি । এখানে রয়েছে মাইক্রো ইউএসবি 2.0 মডেলের ক্যাবল ব্যবহার করার সুবিধা । ক্যাবলটি ব্যবহার করে খুব সহজেই মেমোরি পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নেওয়া যাবে । মাইক্রোএসডিএক্সসি টাইপের মেমোরি কার্ড ডেডিকেটেড স্লট রয়েছে । মেমোরি স্টোরেজে অনেক জায়গা ব্যবহার করার কারণে এখানে সংগ্রহ করে রাখা যাবে প্রয়োজনীয় প্রায় সকল কিছুই । মেমোরি পারফরমেন্সের দিকে লক্ষ্য করে বলা যেতেই পারে যে মোবাইলটিকে ফাস্টেস্ট স্পিডে ব্যবহার করা সম্ভব । স্মার্টফোনটিতে হিউজ পরিমান স্টোরেজ ব্যবহার করার কারণে দ্রুতগতিসম্পন্ন স্পীড পাওয়া যাবে । মেমোরি পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নিয়ে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে ।
প্রাইমারি ও সেলফি ক্যামেরা সেন্সর
ক্যামেরা পারফরম্যান্সের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এখানে থাকছে ট্রিপল রেয়ার প্রাইমারি ক্যামেরা সেটআপ । ওয়াইড সেন্সর দিয়ে সর্বোচ্চ 50 মেগাপিক্সেল অ্যাঙ্গেলে ইমেজ তোলা সম্ভব , পেরিস্কোপ টেলিফটো ফাংশনে রয়েছে 8 মেগাপিক্সেল এবং এর পাশাপাশি আল্ট্রা ওয়াইড সেন্সরে থাকছে 13 মেগাপিক্সেল । আল্ট্রা ওয়াইড সেন্সরটি দিয়ে 123 ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলা যাবে । প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে যুক্ত রয়েছে ডুয়েল এলইডি টোন ফ্লাশ । সেলফি তোলার জন্য সামনের ক্যামেরায় রয়েছে আকর্ষণীয় মানের একটি ক্যামেরা । যেটি দিয়ে 20 মেগাপিক্সেলে ছবি ক্লিক করা সম্ভব । সামনের ক্যামেরায় পাওয়া যাবে এইচডিআর এবং পানোরামা এর মত জনপ্রিয় ফিচার এর সুবিধা । এছাড়াও পাওয়া যাবে অটো ফ্লাশ , অটোজুম , নাইট মুড , স্কিন ফ্লাশ ও ডিএসএলআর মুড সহ বিভিন্ন মুডে ইমেজ তোলার সুযোগ । নতুন এই মডেলটি দিয়ে 1080 ফুল এইচডি পিক্সেলে যে কোন ভিডিও রেকর্ডিং সহ দেখা যাবে ।
ব্যাটারি পাওয়ার
বাজেটের উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দেখা যাবে মোবাইলটির ব্যাটারি পাওয়ার অনেকটা অপ্রত্যাশিত । তবে পারফরমেন্সের দিক দিয়ে মানিয়ে নেওয়ার মতো । non-removable টাইপের ব্যাটারি রয়েছে যার ক্যাপাসিটিতে থাকছে 5000mAh পাওয়ার । আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম । 67 ওয়াট দ্রুত গতিতে চার্জ দেওয়া সম্ভব ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেমে । এছাড়াও মোবাইল ফোনটির সাথে যে চার্জার বক্স দেওয়া হয়েছে সেটি দিয়েও 67 ওয়ার্ড দ্রুতগতিতে চার্জ দেওয়া যাবে । মোবাইলটি ফুল চার্জ হতে সময় নিবে মাত্র 36 মিনিট । রিভার্স চার্জিং ডেলিভারি করা যাবে 10 ওয়াট দ্রুত গতিতে । আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা রিভার্স চার্জিং সিস্টেম কথাটির সাথে সম্পর্ক নেই বা এককথায় বুঝিনা । রিভার্স চার্জিং বলতে বুঝায় একটি স্মার্টফোন থেকে অন্য একটি স্মার্টফোনে চার্জ দেওয়ার সিস্টেমকে ।
সিকিউরিটি সিস্টেম
আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই অন্যের হাত থেকে সুরক্ষা করার জন্য সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে । বর্তমান এই সময়ে সিকিউরিটি সিস্টেমের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হল মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । নতুন এই মডেলটিতেও আমরা পেয়ে যাব মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । মোবাইলটির বডির আন্ডার ডিসপ্লেতে সেট করা হয়েছে এই সেন্সরটি । সেন্সরটি খুব দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম । এর পাশাপাশি আমরা সিকিউরিটি সিস্টেমে পেয়ে যাব অ্যাক্সেলেরোমিটার , প্রক্সিমিটি , গায়রো , কম্পাস ইত্যাদি । সিকিউরিটি পদক্ষেপগুলো অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম । সিকিউরিটি সিস্টেম গুলোকে আমরা খুব দ্রুত এবং তাড়াতাড়ি ব্যবহার করতে পারব যার কারনে আমাদেরকে স্মার্ট ফোনটির আনলক এর ব্যাপারে কোন টেনশন থাকবে না । ঠিক ডানপাশে ব্যবহার করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি সিস্টেম । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ব্যবহার করার কারণে আমরা বলতেই পারি এখানে পাওয়া যাবে প্রিমিয়াম এবং আপডেট কোয়ালিটির সিকিউরিটি পারফরম্যান্স ।
ডিসপ্লে কোয়ালিটি এবং অপারেটিং প্ল্যাটফর্ম
খুবই জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় মানের ডিসপ্লের উপস্থিতি দেখা যায় এই মোবাইলটিতে । সুপার এমোলেড ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন রয়েছে , যার কারন খুব সহজেই যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকেই অনেক দ্রুত টাচস্ক্রিন কাজ করে থাকবে । ডিসপ্লেতে থাকছে 1 বি কালার সাপোর্টেড । টাচ স্ক্রিনে থাকছে হাই কোয়ালিটির রিফ্রেশ রেট 120Hz । ডিসপ্লেতে রয়েছে ফুল এইচডি রেজুলেশন 1440×3220 পিক্সেল । 6.81 ইঞ্চি ডিসপ্লে সাইজ রয়েছে যা আকারে বৃহৎ আকৃতির এবং গেমিং পারফর্মেন্স ও ভিডিও প্লেব্যাক দেখার জন্য একদম পারফেক্ট । ডিসপ্লে প্রটেকশন এর জন্য রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ভিকটাস । গুগোল এর ধারাবাহিকতায় এই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 । চিপসেটে রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এর নতুন মডেল এবং প্রসেসরে রয়েছে জনপ্রিয় মডেল অক্টা কোর । গেমিং গ্রাফিক্স এর জন্য জিপিইউতে অ্যাড্রিনো 660 এর উপস্থিতি দেখা যায় ।
গেমিং পারফরম্যান্স
গেমিং পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটি দারুন ফিচার দিবে বলে আশা করা যায় । প্রথম ধাপের অনলাইন গেম গুলো যেমন পাবজি , ফ্রী ফায়ার দুর্দান্ত স্পিডে গেম প্লে করা যাবে । অনলাইন গেম গুলো হাই কোয়ালিটির গ্রাফিক্সের সাথে খেলা যাবে কেননা গেমিং গ্রাফিক্স এর জন্য থাকছে অ্যাড্রিনো 660 । গেম খেলার সময় কোন প্রকার হ্যাং অথবা থেমে যাওয়া সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না । আল্ট্রা গ্রাফিক্স এর মাধ্যমেই অনলাইন গেম প্লে করা যাবে । অনলাইন গেম গুলোর পাশাপাশি অফলাইন ধাপের যে কোন গেম খেলা সম্ভব । আমাদের চারপাশে আমরা অনেকে দেখতে পাবো যারা অনলাইন গেমস গুলোকে খুব ভালো মানের গ্রাফিক্স এর সাথে গেম প্লে করার জন্য স্মার্টফোনকে বেছে নিয়ে থাকে । আবার অনেকেই রয়েছে যারা অনলাইন গেম গুলোর মাধ্যমে লাইভ স্ট্রিম করে থাকে স্মার্টফোন দিয়ে । তবে এই মোবাইলটির ক্ষেত্রে আমরা কি সেই সুবিধা গুলো পাবো ? স্মার্টফোনটির গেমিং গ্রাফিক্স খুবই ভালো এবং পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে স্মার্টফোন রয়েছে হাই কোয়ালিটি পারফরম্যান্স যার কারণে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় অনলাইন গেম গুলোকে এই স্মার্টফোনটির সাহায্যে খেলা যাবে ।
নেটওয়ার্কিং সিস্টেম
মোবাইলটির নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে 2 জি , 3 জি , 4 জি নেটওয়ার্ক এর পাশাপাশি উন্নত মানের ফাস্টেস্ট নেটওয়ার্ক কানেকশন 5 জি এর আওতায় রাখা হয়েছে ।
ন্যানো সিম কার্ড এর পাশাপাশি এখানে ব্যবহার করা যাবে হাইব্রিড ডুয়েল সিম । হাইব্রিড ডুয়েল সিম কার্ড ব্যবহার করেও ফাস্টেস্ট নেটওয়ার্ক কানেকশন উপভোগ করা সম্ভব । 5 জি নেটওয়ার্কের ভার্সনগুলো হলো 1,3,28,41,77,78,79 । 4 জি এবং 5 জি নেটওয়ার্ক কানেকশন যুক্ত রেখে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ 42.2 এমবিপিএস স্পিড উপভোগ করা যাবে । নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের কথা বলতে গেলে আমরা প্রায় সময়ই ইন্টারনেট সংযোগ অনেকটাই ধীরগতি দিতে দেখি । প্রায় অনেক অনেক সময় দামি স্মার্টফোন গুলো নেটওয়ার্কিং সিস্টেম অনেকটাই খারাপ দিয়ে থাকে । কিন্তু ব্রাউজিং এবং অন্যান্য নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের জন্য এমআই কোম্পানির এই ডিভাইসটির অনেকটা ভালো ভাবেই ব্যবহার করা যাবে । এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকছে না ।
রিলিজের সময় এবং প্রাইস
শাওমি কোম্পানির হাত ধরে এপ্রিল 2, 2021 প্রথমবারের মতো মার্কেটগুলোতে রিলিজ করা হয় Xiaomi Mi 11 Pro স্মার্টফোনটিকে । কোম্পানিটির দেওয়া তথ্য মতে জানা যায় মোবাইলটিকে অফিশিয়াল ভাবে রিলিজ করা হয়েছে । শাওমি শোরুম ছাড়াও দেশের যেকোনো মার্কেটপ্লেসগুলোতে মোবাইলটিকে সুলভ মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে । বর্তমান সময়ে মোবাইলটির মার্কেটমূল্য ৳70,000 টাকা । এই স্মার্টফোনটির মডেল অফিশিয়ল ছাড়াও আপনারা মার্কেটপ্লেসগুলোতে আনঅফিসিয়াল মডেল পেয়ে যাবেন । তবে অফিশিয়ালি স্মার্টফোনটি তুলনায় আনঅফিসিয়াল মডেলদের মূল্য কিছুটা কম । এই স্মার্টফোনটিকে কিনতে হলে আমাদেরকে 70,000 হাজার টাকা খরচ করতে হবে । এখন আমরা অনেকে মনে করতে পারি এপ্রিলের মধ্যেই স্মার্টফোনটি আসলে কেমন পারফরম্যান্স দিবে । স্মার্টফোনটির স্পেসিফিকেশনে আলোচনা দেখে আমরা কমবেশি সকলেই বুঝতে পারছি এই স্মার্টফোনটি মিডিয়াম সাইজের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও এখানে রয়েছে হাই কোয়ালিটির পারফরম্যান্স এবং ফিচার । অর্থাৎ দামের সাথে স্মার্ট ফোনের পারফরম্যান্স মিল রেখেই মার্কেটে রিলিজ করা হয়েছে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন