Ads

একের পর এক মডেল রিলিজের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রেখেছে শাওমি কোম্পানি । অন্যান্য ব্র্যান্ড এর তুলনায় বর্তমানে শাওমি কোম্পানির কাস্টমার দিন দিন বেড়েই চলেছে । তাদের রিলিজ করা মোবাইল গুলো স্বল্প বাজেটে ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে । কোম্পানির দেওয়ার রিপোর্টে দেখা গেছে এমআই সিরিজের মডেল গুলোর চাহিদা অনেকাংশেই বেশি ‌‌। শাওমির ধারাবাহিকতায় মার্কেটের নতুন আকর্ষণ Xiaomi Mi 11 Ultra । মোবাইলটির ফুল স্পেসিফিকেশন আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অনেকটাই ভালো লেগেছে । গেম খেলার জন্য অথবা ভালো ক্যামেরা পারফরম্যান্স এবং মেমোরি পারফরম্যান্সের জন্য আমরা যারা মোবাইল খুঁজছি এই মডেলটি তাদের কাছে সেরা বলে মনে হতে পারে । মোবাইলটির ফুল স্পেসিফিকেশন এর পাশাপাশি সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো তুলে ধরা হলো ।



এমআই 11 আল্ট্রা | Xiaomi Mi 11 Ultra BD Price in Bangladesh With Specification


ব্যাটারি পারফরম্যান্স


ব্যাটারি পারফরম্যান্সের জন্য এমআই সিরিজের প্রতিটি মডেল সুপরিচিত । বিশেষ করে এই মডেলটি ব্যাটারি পারফরমেন্সের জন্য খুবই জনপ্রিয় । কেননা  স্মার্টফোনটির ব্যাটারি কোয়ালিটিতে থাকছে non-removable ব্যাটারি টাইপ । যার ক্যাপাসিটিতে রয়েছে মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটির মধ্যে ভালো মানের পাওয়ার 5000mAh । ফোনটিকে চার্জ দেওয়ার জন্য যে চার্জার বক্স দেওয়া হয়েছে সেটি দিয়ে 67 ওয়াট দ্রুতগতিতে ফুল চার্জ হতে মাত্র 36 মিনিট লাগবে । এছাড়াও থাকছে ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম । রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জ সিস্টেমে 10 ওয়াট দ্রুতগতিতে চার্জ আদান-প্রদান করা সম্ভব । ব্যাটারি পারফরমেন্সে জন্য এই মডেলটি খুবই ভালো যেটিকে দীর্ঘক্ষন ব্যবহার করা যাবে অনায়াসেই ।


মেমোরি এবং স্টোরেজ


মেমোরি পারফরম্যান্সের জন্য মোবাইলটির প্রতি ইতিবাচক আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায় । অন্যান্য মডেলগুলোর থেকে তুলনামূলক একটু বেশি মেমোরি ফিচার লক্ষণীয় । যদিও আলাদাভাবে পাওয়া যাচ্ছেনা মেমোরি কার্ড স্লট । স্টোরেজ ফিচারে ইন্টারনাল মেমোরিতে রেম ব্যবহার করা হয়েছে 8/12 জিবি এবং রোম পাওয়া যাবে 128/512 জিবি । যেহেতু এখানে থাকছে ওটিজি ক্যাবল ব্যবহারের সুবিধা সেহেতু বলা যেতে পারে এখানে মেমোরি পারফরম্যান্স খুব সহজেই প্রয়োজনমতো বৃদ্ধি করে ব্যবহার করা যাবে । অত্যাধিক স্টোরেজ থাকার কারণে ফাস্টেস্ট স্পিডে মোবাইলটিকে ব্যবহার করা যাবে ‌। একটি স্মার্ট ফোনকে দ্রুত গতিতে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন হয়ে থাকে ভালো মানের মেমরি স্টোরেজ । এ স্মার্টফোনটির দিকে লক্ষ্য করলাম না দেখতে পাব এখানে রয়েছে খুবই ভালো মানের মেমোরি স্টোরেজঃ যাতে খুব সহজেই দ্রুতগতি স্পিড পাওয়া যাবে । স্মার্টফোনটি ব্যবহারে কখনো লেক চোখে পড়বে না ‌‌।  




বডি ডিজাইন এবং কোয়ালিফিকেশন


6.47×2.94×0.33 ইঞ্চি আকারের বডি দেওয়া হয়েছে , যা ব্যবহারে পারফেক্ট বলে মনে হবে । খুব সহজেই কিন্তু একই স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা যাবে এই ফোনটিকে । বডিবিল্ডারে পাওয়া যাবে কর্নিং গরিল্লা গ্লাস ভিক্টাস এর গ্লাস ফ্রন্ট , গ্লাস ব্যাক এবং অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেম । আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এই মডেলটি আইপি 68 ধুলোবালি এবং ওয়াটার প্রুফ । বডির রাইট কর্ণারে পাওয়া যাবে ভলিউম এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বাটন অপরদিকে লেফট কর্ণারে পাওয়া যাবে সিম কার্ড স্লট । মডেলটি ওজনে একটু ভারী , যা প্রায় 234 গ্রাম । তবে হাতে নিয়ে ব্যবহার করতে কমফরটেবল অনুভব হবে । মোবাইলটিকে পাওয়া যাবে সাদা এবং কালো আকর্ষণীয় মানের ভিন্ন দুটি কালারে । স্মার্টফোনটির বডিতে থাকছে দারুন ফিনিশিং এবং আকর্ষণীয় লুক । ডিভাইসটিতে প্রটেকশন থাকার কারণে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম রয়েছে এবং হাতে ব্যবহার করার জন্য এই স্মার্টফোনটি অনেকটাই সৌখিন । 



সিকিউরিটি অপশন


অন্যের হাত থেকে সুরক্ষার জন্য মোবাইলটির সিকিউরিটি অপশনে পাওয়া যাবে অ্যাক্সেলেরোমিটার , প্রক্সিমিটি , কম্পাস , গায়েরো , ব্যারোমিটার ইত্যাদি ব্যবস্থার পাশাপাশি জনপ্রিয় মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি আন্ডার ডিসপ্লেতে সেট করা হয়েছে । সিকিউরিটি পদক্ষেপগুলো অনেকটা দ্রুত সনাক্ত করতে সাহায্য করবে । নিখুঁত এবং সঠিকভাবে সনাক্তকরণে সিকিউরিটি পদক্ষেপগুলোর অবদান ব্যাপক ।




ক্যামেরা সেটআপ


প্রাইমারি ক্যামেরা সেন্সরে ট্রিপল রেয়ার আইটেমের ক্যামেরা যুক্ত করা হয়েছে ‌‌। প্রাইমারি সেন্সরের ওয়াইড ফাংশনে 50 মেগাপিক্সেল ক্যামেরার উপস্থিতি লক্ষ করা যায় । ওয়াইড ক্যামেরাটির ফিচারে পাওয়া যাবে পিডিএফ এবং লেসার এএফ । পেরিস্কোপ টেলিফটো সেন্সরে 48 মেগাপিক্সেল রয়েছে , যার ফিচারে পাওয়া যাবে পিডিএফ , অপটিক্যাল জুম , 120× হাইব্রিড জুম 
এবং পিডিএফ ফিচারের সাথে আল্ট্রা ওয়াইড ফাংশনে পাওয়া যাবে 48 মেগাপিক্সেল । ক্যামেরা গুলো দিয়ে মনোরঞ্জক ও বিভিন্ন মুড সহকারে ইমেজ তোলা যাবে । সেলফি তোলার জন্য ফ্রন্ট ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে 20 মেগাপিক্সেলের আরেকটি ওয়াইড অ্যাংগেল ক্যামেরা । প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে আন্ডার ডিসপ্লেতে সংযুক্ত রাখা হয়েছে ডুয়াল এলইডি টোন ফ্ল্যাশ । সেলফি ক্যামেরা ফিচারে পাওয়া যাবে এইচডিআর , পানোরামা এবং সেলফি ডিসপ্লে এইচডিআর এর 
সুবিধা ‌। ভিডিও দেখা যাবে অথবা রেকোডিং করা যাবে ফুল এইচডি পিক্সেলে । 




ডিসপ্লের ধরন এবং কোয়ালিটি


স্মার্টফোনটিতে 6.81 ইঞ্চি সাইজের এলসিডি প্যানেল বিদ্যমান । ~91.4% স্ক্রিন টু বডির রেটিও রেট । সুপার এমোলেড কোয়ালিটির টাচস্ক্রিন রয়েছে , আমরা সবাই জানি যে এমোলেড টাইপের টাচস্ক্রিন গুলো দ্রুত টার্চ কাজ করে থাকে এবং যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকেই কাজ করার ভূমিকা রাখে । এলসিডি প্যানেলটিতে সাপোর্ট করবে 1 বি কালার । ডিসপ্লেতে হাই কোয়ালিটির রিফ্রেশ রেট রয়েছে 120 হার্জ । 1440×3200 পিক্সেলের রেজুলেশন এর পাশাপাশি এলসিডি প্যানেল এর ঘনত্ব রয়েছে ~515 পিপিআই ডেনসিটি । ডিসপ্লে প্রটেকশন এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কর্নিং গরিল্লা গ্লাস । এছাড়াও এলসিডি প্যানেলের ফিচারে আমরা পেয়ে যাব মাল্টিটাচ এর সুবিধা । অপারেটিং সিস্টেমে থাকছে এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 , কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এর আপডেট ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে চিপসেটে অপরদিকে প্রসেসরে থাকছে অক্টাকোর ।




নেটওয়ার্ক কানেকশন


নেটওয়ার্ক টেকনোলজিতে বিদ্যমান রয়েছে 5 জেনারেশন পর্যন্ত নেটওয়ার্ক সংযোগ ব্যাবহারের 
সুবিধা । ফোরজি নেটওয়ার্ক কানেকশন এর ভার্সনগুলো হলো 1,2,3,4,5,7,8,12,17,20,28,32,38,40,41,42,66
এবং ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক এর ভার্সনগুলো 1,3,5,7,8,20,28,38,40,41,77,78,79 । ফোরজি এবং ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক কানেকশন রেখে সর্বোচ্চ প্রতি সেকেন্ডে 42.2 এমবিপিএস নেটওয়ার্ক স্পিড উপভোগ করা যাবে । 5.1 মডেলের ব্লুটুথ , ওয়াইফাই , হটস্পট , জিপিএস , এনএফসি , ইনফারেট পর্ট ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক গুলো ব্যবহার করা যাবে , তবে এখানে থাকছে না এফএম রেডিও ব্যবহারের সুবিধা । ইউএসবি 2.0 মডেলের ক্যাবল ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে । ন্যানো সিম কার্ড এর পাশাপাশি আমরা আমাদের প্রয়োজন মত ব্যাবহার করে নিতে পারব হাইব্রিড সিম ।




গেমিং পারফরম্যান্স


গেমিং পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটির ফিচার অনেকটাই ভাল বলা যায় । প্রথমত , মোবাইলটির মেমোরি পারফরম্যান্স অনেকটাই ভালো এক কথায় বলা চলে যা গেম খেলার জন্য ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে যাবে । দ্বিতীয়ত , ফোনটির ব্যাটারি পারফরমেন্স মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটির , এক্ষেত্রেও গেম খেলার জন্য ব্যাটারি খারাপ নয় । ফুল চার্জে অনায়াসেই একদিন ভালোভাবে গেম খেলা যাবে । তৃতীয়ত , এই মোবাইলটির জিপিইউতে গেমিং গ্রাফিক্স এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাড্রিনো 660 । অনলাইন জগতের প্রথম ধাপের গেমগুলো উন্নত মানের গ্রাফিক্স এর সাথে গেম প্লে করা পসিবল । পরিশেষে বলা যেতে পারে স্মার্টফোনটি গেমিং পারফরম্যান্সের জন্য পারফেক্ট ।





রিলিজের সময় এবং মূল্য


এপ্রিল 2 , 2021 মডেলটিকে মার্কেটে প্রথমবারের মতো রিলিজ করলেও 16 সেপ্টেম্বর , 2021 শেষবারের মতো আপডেট করা হয় । কোম্পানির দেওয়া তথ্য থেকে পাওয়া যায় এই মোবাইল থেকে অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল দুরূপেই মার্কেটে পাওয়া যাবে । আন্তর্জাতিক মার্কেট সহকারে দেশের মার্কেটে 
মোবাইলটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে 7 পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট এর সাথে ৳88,000 টাকা । স্মার্টফোনটিকে হাই কোয়ালিটি এবং ভালো মানের স্মার্টফোন বলা যেতে পারে । আমরা যারা এমআই কোম্পানিকে ভালবাসি এবং তাদের রিলিজ করা মিডিয়াম স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করতে চায় তাদের জন্য এই মডেলটা অনেকটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াতে পারে ।



কাদের জন্য এই স্মার্টফোনটি সেরা হতে পারে 


আমরা অনেকেই রয়েছে যারা এমআই কোম্পানির রিলিজ করে স্মার্টফোন গুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকি । মোটামুটি মিডিয়াম প্রাইস এর মধ্যে থাকা তাদের স্মার্টফোনগুলোর চাহিদা মার্কেটে একটু বেশি । আমরা যারা মিডিয়াম সাইজের মধ্যে এমআই কোম্পানিগুলোকে ব্যবহার করতে চাই তাদের জন্য এই মডেলটি অনেকটাই সেরা বলে মনে হবে মার্কেট গুলোতে । যারা মোটামুটি গ্রাফিক্স ডিজাইনের সাথে অনলাইন গেম খেলতে পছন্দ করে এবং যারা গেম খেলার জন্য এই এই মোবাইল থেকে বেছে নিয়েছে তাদের জন্য এই স্মার্টফোনটি মার্কেটে রিলিজ করা হয়েছে । 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads