মিডরেঞ্জের মধ্যে স্মার্টফোন বা হ্যান্ডসেট ব্যবহার করার জনপ্রিয়তা প্রায় সকলের মধ্যে দেখা যায় । এক কথায় আমি বলতে পারি 15 থেকে বিশ হাজার টাকার এই বাজেট তাকে আমরা সুইটেবল বাজেট হিসেবে ধরতে পারি । মোটামুটি মিডিয়াম বাজেটের প্রায় বেশ কিছু স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করেছে ইনফিনিক্স ব্র্যান্ড । তবে শুধু যে মিডিয়াম রেঞ্জের স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করে এমনটা কিন্তু নয় । ইনফিনিক্সকে আমরা হাই কোয়ালিটির স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করতে দেখেছি । ইনফিনিক্স এর হট সিরিজের খুব ভালো একটি জনপ্রিয়তা আমরা মার্কেটপ্লেস দেখতে পাই । মিডিয়াম বাজেটে ইনফিনিক্স হট সিরিজ এর মধ্য দিয়ে মার্কেটে নতুন মডেল লঞ্চ করলো যার নাম Infinix Hot 12 । বাজেট হিসেবে মিড রেঞ্জ পেলেও পারফরম্যান্সে গ্রাহকদের কি কি সুবিধা এবং অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে এটা জানাটাও অতীব জরুরী একটি বিষয় । তো কথা না বাড়িয়ে আমরা এখন স্মার্টফোনটির ফিচারে মুভ অন করে ফেলি ।
রিয়েলমি ৯ প্রো প্লাস স্পেসিফিকেশন ২০২২
ডিসপ্লে সাইজ
6.82 ইঞ্চি সাইজের মোটামুটি বড়সড় একটি ডিসপ্লের দেখা পাওয়া যাবে Infinix Hot 12 মডেলটিতে । এখানে আমরা দেখতে পেয়েছি আইপিএস এলসিডি কোয়ালিটির ডিসপ্লে । যেখানে থাকছে ৯০ হার্জ রিফ্রেশ রেট । 720×1612 পিক্সেল রেজুলেশন দেওয়া হয়েছে তবে ফুল এইচডি রেজুলেশন থাকলে ব্যাটার রেজাল্ট পাওয়া যেত । 259 পিপিআই পিক্সেল ডেন্সিটি রয়েছে । তবে ব্রাইটনেসের ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা ঘাটতি লক্ষ্য করতে পেরেছি যার কারণে স্বল্প আলোতে বেস্ট পারফরম্যান্স খুজে পাওয়া গেলেও সালাইটে আমরা ব্রাইটনেসের কিছুটা ঘাটতি দেখতে পাবো । এই বাজেটের মধ্যে আমরা হট সিরিজের প্রিভিয়াস ভার্সনগুলোতেও আইপিএস এলসিডির ব্যবহার দেখতে পেয়েছি আর এখানেও ব্যতিক্রম কিছু নেই । তবে সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার মতো হলেও ডিসপ্লের ক্ষেত্রে আমি ফুল এইচডি রেজুলেশন আশা করেছিলাম । ইনফিনিক্স হয়তো তাদের নেক্সট মডেল গুলোতে এদিকে কিছুটা হলেও নজর দিবে ।
ব্যাটারি পাওয়ার এন্ড নেটওয়ার্ক
লিথিয়াম লন টাইপের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে যার ক্যাপাসিটিতে থাকছে 5,000 মিলি আম্পিয়ার পাওয়ার । এর পাশাপাশি এখানে আমরা ফাস্ট চার্জিং সিস্টেম হিসেবে পাবো 18 ওয়াট । এছাড়া আমরা বাড়তি সুবিধার দেখা পাইনি যেমন ওয়ারলেস চার্জিং সিস্টেম বা চার্জ ডেলিভারি সিস্টেম । তবে ব্যাটারি ব্যাকআপে আমরা যে ফ্যাসিলিটি পেয়েছি তা নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্ট থাকার মতোই । স্বল্প বাজেটে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারযোগ্য একটি স্মার্টফোন যদি ব্যবহার করার আকাঙ্ক্ষা আপনার ভেতর জন্মে থাকে তাহলে এই ডিভাইসটি আপনার জন্য পারফেক্ট হতে পারে আশা করা যায় । স্মার্টফোনটিতে ডুয়েল সিম কার্ড অন রেখে সর্বোচ্চ ফোর জেনারেশন অর্থাৎ ফোরজি নেটওয়ার্ক উপভোগ করা যাবে । এছাড়াও থাকছে ওয়াইফাই , হটস্পট , ব্লুটুথ এর মত অন্যান্য তারবিহীন নেটওয়ার্কিং সুযোগ । এছাড়াও ব্যবহার করার সুবিধা থাকছে ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট এবং ওটিজি ক্যাবল ।
বডি ডিজাইন
ইনফিনিক্স এর প্রায় প্রতিটি সিরিজ আমরা মোটামুটি বড়সড়ো দেখতে পাই । Infinitx hot 12 ডিভাইসটিও মোটামুটি কিছুটা বড়সড়ো । 195 গ্রাম ওজনের এই স্মার্টফোনটির ঠিকনেস 8.3 মিলিমিটার । ইনফিনিক্স এর অন্যান্য মডেল গুলো থেকে এই ডিভাইসটি আকারে কিছুটা বড় । বডি ডেকোরেশন এর চারদিকে থাকছে প্লাস্টিকের আবরণ । যা হালকা আঘাতেও ভেঙে যেতে পারে এজন্য আপনাকে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে ব্যাক কভার বিশেষ করে বডি বিল্ডের সুরক্ষার জন্য । বডির ডান পাশে আমরা google assistant বাটন এবং ভলিউম রকার দেখতে পাবো এবং বাম পাশে থাকছে সিম কার্ড স্লট । বডির নিচের দিকে আমরা ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট এবং একটি অডিও হেডফোন জ্যাকের দেখা পাব ।
ক্যামেরা পারফরম্যান্স ও সিকিউরিটি
প্রাইমারি ক্যামেরা ডিজাইন এর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপ দেখতে পাব । প্রাইমারি ক্যামেরা দুটিকে লম্বালম্বি আকারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে । যার ওয়াইড সেন্সরে 13 মেগাপিক্সেল এবং এর সাথে থাকছে দুই মেগাপিক্সেলের একটি প্রাইমারি ক্যামেরা লেন্স । তবে এখানে আমি আল্ট্রা ওয়াইড ফাংশনটিকে খুব বেশি মিস করবো । কোম্পানিটি যদি এখানে ৫ মেগাপিক্সেলের একটি আলট্রা ওয়াইড ফাংশন দিয়ে দিত তাহলে হয়তো গর্জিয়াস পারফরমেন্স ফুটে উঠতো । সেলফি তোলার জন্য সামনের ক্যামেরায় ডিসপ্লের মাঝামাঝি বরাবর অঞ্চলে 8 মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও প্রাইমারি ক্যামেরাগুলোর সাথে থাকছে ডুয়েল এলইডি ফ্লাসলাইট । প্রাইমারি ক্যামেরা গুলোর মাধ্যম 1080 পিক্সেলে ভিডিও রেকর্ড করা সম্ভব । ডিভাইসটির সাইড মাউন্টেডে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেট করা হয়েছে আপনি চাইলে খুব সহজে সেটিকে ব্যবহার করতে পারবেন ।
অপারেটিং সিস্টেম এন্ড মেমোরি
হ্যান্ডসেটটির অপারেটিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন 12 এর মাধ্যমে । মিডিয়াটেক হেলিও G85 প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে যেটি মূলত নামিদামি একটি প্রসেসর । প্রসেসরটি মূলত একটি অক্টাকোর প্রসেসর যেটি 12 ন্যানোমিটারে তৈরি । 12 ন্যানোমিটারে তৈরি হওয়ার কারণে স্মার্টফোনটির ওজন কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে । গেমিং গ্রাফিক্স এর জন্য ডিভাইসটি আমাদেরকে অফার করেছে Mali-G52 । অপারেটিং সিস্টেম বা প্রসেসরের দিক দিয়ে স্মার্টফোনটি মোটামুটি আপডেট এনেছে । এবার আমরা আলোচনা করবো স্মার্টফোনটির মূল পারফরমেন্স অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন মেমোরি পারফরম্যান্স নিয়ে । দুইটি ভেরিয়েন্টের সাথে এই স্মার্টফোনটি মার্কেটে লঞ্চ হয়েছে । 4/6 জিবি রেম এর সাথে রোম দেওয়া হয়েছে 128 জিবি । হ্যাঁ , এখানে আমরা কিন্তু আলাদাভাবে একটি মেমোরি কার্ড স্লট ব্যবহার করতে পারবো ।
প্রাইস বা মূল্য
মিড রেঞ্জের স্মার্টফোনের কথা শুনে অনেকেই হয়তো ধারণা করে ফেলেছেন যে এই স্মার্টফোনটির মূল্য 10 থেকে 15 হাজার টাকার মধ্যেই থাকবে । 6/128 জিবি ভেরিএন্টের স্মার্ট ফোনটি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে 15,499 টাকা খরচ করতে হবে । বাংলাদেশের মার্কেট বিবেচনায় 15,499 টাকা মোটামুটি মিডিয়াম রেঞ্জের মধ্যে পড়ে । এই স্মার্টফোনটির দাম ইন্ডিয়ান মার্কেটপ্লেসে 12,190 রুপি । আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে Infinix Hot 12 স্মার্টফোনটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে 159 ডলার । স্পেসিফিকেশন এবং বাজেটের মধ্যে একটি দারুন কম্বিনেশন আমরা এখানে দেখতে পেয়েছি । আপনার কাছে এই স্মার্টফোনটির স্পেসিফিকেশন অথবা ফিচার কেমন লেগেছে সেটা ছোট করে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন