Ads

রেডি টু রেস”! আমরা যখন এই ট্যাগলাইনটি শুনি তখন যে নাম আমাদের মনে আসে সেটি হচ্ছে কেটিএম। এই অস্ট্রিয়ান মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক হয়ে উঠেছে। এর পিছনে কারণ তাদের বাইকের গুণগতমান, আধুনিক এবং আকর্ষণীয় ফিচার, আকর্ষনীয় কালার স্কিম এবং পারফর্মেন্স। আমরা যদি তাদের এন্ট্রি লেভেলের ১২৫ সিসি বাইকগুলিকেও দেখি তাহলে মনে হবে এগুলি তার নিজেদের সেগমেন্টের থেকে বেশি। এই লেখায় আমরা কেটিএমের প্রিমিয়াম টাইপ ১২৫ সিসি একটি মোটরসাইকেল যা হছে কেটিএম আরসি 125 এর বিষয়ে কিছু আলোচনা করতে যাচ্ছি। এই বাইকটি 125 সিসির বাইক হতে পারে তবে এটি তার বড় ভাই আরসি ৩৯০ এর মতই। কমপ্যাক্ট স্পোর্টি লুক এবং এর ফিচারগুলি দেখে যে কেউ ভেবে বসবে এই বাইকটি অন্য যে কোনও 150/160 সিসি সেগমেন্টের মোটরসাইকেল এবং এর কার্যক্ষমতা আসলেও তাই। এখন প্রশ্ন হতে পারে, কীভাবে?নিচের লাইনগুলোতে আমরা এই স্পোর্টস বাইকটির ফিচারগুলো আলোচনা হাইলাইট করব এবং কেটিএম এর দাবিকৃত বিষয়গুলো আসোলেও ঠিক কিনা তা দেখার চেষ্টা করব।


কেটিএম আরসি ১২৫ মটর বাইকের রিভিউ | KTM RC honda price in India


কেটিএম আরসি ১২৫ এর ফিচার গুলো

ব্রেকিং সিস্টেম

কেটিএম আরসির জন্য সেরা মানের ডিস্ক প্লেট সহ ডুয়াল চ্যানেল এবিএস দেয়া হয়েছে। বাইকটি যে কোনও জায়গায় থামাতে আপনার আর কী প্রয়োজন? BYBRE এর সাথে মিলিত হয়ে কেটিএম এই পকেট রকেটের জন্য উচ্চমানের ব্রেকিং তৈরি করেছে। সামনে রয়েছে চারটি পিস্টন র‌্যাডিয়ালি বল্টেড ক্যালিপার এবং 300 মিলিমিটার ডিস্কের এবং পেছনে রয়েছে সিঙ্গেল পিস্টন ফ্লোটিং ক্যালিপার এবং 230 মিলিমিটার ডিস্কের ব্যাবহার। এই ব্রেকিং এর উপর আস্থা রেখে কেটিএম আরসিতে পাওয়া যাবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যা রাইডারদের জন্য প্রো লেভেল ব্রেকিং সরবরাহ করবে।

ফুয়েল ট্যাঙ্ক এবং সীট)

কেটিএম আরসি ১২৫ বাইকটিতে ১০ (১.৫ লিটার সহ) লিটার ফুয়েল ধারন ক্ষমতা স্মপন্ন একট মেটাল ফুয়েল ট্যাঙ্ক দেয়া হয়েছে। এই ফুয়েল ট্যাঙ্কারটি স্মুথ রাইডার এরজোনমিক্সের সাথে আরসির সুপার স্পোর্ট ডিজাইনটিকে পরিপূর্ন করতে অনেকটা সহায়ক।

রেসিং টাইপ এলোয় এবং স্পোর্টি টায়ার

রেসিং টাইপ স্পোর্টি টায়ারগুলি যেমন স্থিতিশীল তেমন হালকা,১৭ ইঞ্চি কমলা রঙের এলোয় রিমগুলো এই বাইকের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এছাড়াও, সামনে ১১০ মিমি প্রশস্ত টায়ার এবং পিছনে একটি সর্বাধুনিক ১৫০ মিমি টায়ার এই বাইকের স্টেবিলিটি এবং গ্রিপিং নিশ্চিত করে। এছাড়াও, প্রিমিয়াম রাবার দিয়ে মোড়ানো, এই টায়ারগুলি আপনাকে শুকনো বা ভেজা জাতীয় যেকোন পরিস্থিতিতেই পথ চলতে বেশ সাহায্য করবে।

সাসপেনশন

কেটিএম আরসি ১২৫ এর সামনে রয়েছে ডাব্লুপি স্পোর্টি টাইপ আপসাইড ডাউন টেলিস্কোপিক সাসপেনশন। এটি সর্বোচ্চ স্তরের স্থিতিশীলতা এবং কমফোর্ট নিশ্চিত করতে পারে, তা আপনি যেই রাস্তায় থাকেননা কেন। ৪৩ মিমি টিউব ব্যাস সম্পন্ন আরসির এই সাসপেনশনগুলো তার বড় ভাইদের মতো একই কর্মক্ষমতা একই। অন্যদিকে, ডব্লিউপি এপেক্স - মনোশক রেয়ার সাসপেনশন পারফেক্ট কর্নারিং এবং আরাম নিশ্চিত করবে সন্দেহ ছাড়াই।

উইন্ডশীল্ড

কেটিএম আরসি ১২৫ উইন্ডশীল্ডের উন্নত ডিজাইন এয়ারোডাইনামিক ডিজাইনের সাথে নিখুঁতভাবে মিলিত হয়ে কাজ করে এবং চালকদের জন্য খুব ভাল বাতাস কাটতে সহায়তা করে। গতির কারণে সমস্যাগুলি চালকদের কখনও বিরক্ত করে না এই ধরনের উইন্ডশীল্ড এর জন্য।

রাইডিং সীট এবং থিন টেইল ডিজাইন

আরসি ১২৫ এর টু স্টেপ সীটটি সুপার স্পোর্ট এগ্রোনমিক্স এর সাথে সাথে রাইডার এবং পিলিয়নকে খুব ভাল পারফর্মেন্স দিতে প্রস্তুত। রাইডারদের জন্য ৮২০ মিমি সীট হাইট নিশ্চিত করে যে আপনার আপনার স্পোর্টিং রাইডিং ভঙ্গি। পিলিয়ন সীট রাইডিং সিটের তুলনায় খানিকটা উঁচুতে সেট করা হয়েছে এই থিন টেইল ডিজাইনটি আরামদায়ক কুশন এবং ইন্টিগ্রেটেড গ্র্যাবরেইলের সাথে মিলিত হয়ে পিলিয়ন করফোর্ট নিশ্চিত করে অনেকটাই।

ইন্টিগ্রেটেড ব্লিংকারস

দ্রুত এবং আরামদায়ক রাইডিংয়ের জন্য কেটিএম আরসি ১২৫ এ মিরর স্ট্রাকচারের সাথে রাখা হয়েছে ব্লিংকারগুলি, অর্থাৎ সাইড ইন্ডিকেটর। এই ধরণের ইন্টিগ্রেটেড ব্লিংকারস সেট আপ কেবল স্পোর্টস বাইকেই দেখা যায়।

হেডল্যাম্প

আরসি এর জন্য ১২৫ এর জন্য কেটিএম শক্তিশালী টুইন হেডল্যাম্প ব্যবহার করেছে, যা কম আলো পরিস্থিতি এবং অন্ধকার অবস্থার সর্বাধিক দৃশ্যমানতা সরবরাহ করতে প্রস্তুত।

উন্নতমানের এলসিডি মিটার প্যানেল

উন্নত এবং সম্পূর্ণরূপে এলসিডি ডিসপ্লে প্যানেলটি কেটিএম আরসি ১২৫ এর পক্ষথেকে পুরোপুরি রেডি হয়ে রয়েছে রাইডারদের জন্য। এতে আরোহীদের চলাচল সহজ করার জন্য রয়েছে গিয়ার ইনডিকেটর, লো ফুয়েল ইনডিকেটর, সার্ভিস রিমাইন্ডার মনিটর, আরপিএম রিমাইন্ডার, স্পিডোমিটার এবং একটি সুন্দর ডিজিটাল ঘড়ি।
কেটিএম আরসি ১২৫ এই সমস্ত আকর্ষণীয় ফিচারগুলো নিয়ে এসেছে তার ব্যবহারকারীদের জন্য। এখন যদি আমরা অন্যান্য ফিচারগুলোর দিকে দেখি তবে আমরা দেখতে পাব।

ডিজাইন এবং লুক

কেটিএম আরসি ১২৫ এর ডিজাইন খুব আকর্ষণীয় এতে কোন সন্দেহ নেই। এই বাইকের সামনের অংশটি বেশ চমকপ্রদ বলে মনে হচ্ছে, কারণ বৃহত্তর ফুয়েল ট্যাঙ্কার, এরোডাইনামিক ডিজাইন এবং আকর্ষণীয় শক্তিশালী কিটগুলো এই বাইকের লুককে অনেকটা চোখে লাগার মত করে তুলে। পুরো ট্যাঙ্কটি মেটাল দ্বারা তৈরি যা সম্পূর্ণ ফেয়ারিং রয়েছে। আকর্ষণীয় টুইন হেডল্যাম্প এই বাইকটিকে নিজের সেগমেন্টের অন্যান্য বাইক থেকে আলাদা করে তোলে। ক্লিপঅন হ্যান্ডেলবার এবং ভাল মানের উইন্ডশীল্ডের সাথে মিলিত হয়ে বাইকটিকে দিয়েছে এগ্রেসিভ লুক। তার পাশাপাশি, কমপ্যাক্ট স্পোর্টি সাইলেন্সার এবং কমলার রঙের অ্যালোই হুইল ও প্রশস্ত টায়ারগুলি এই বাইকের আউটলুকে নিখুঁত করে তোলে। পেছন থেকে দেখলে নম্বর প্লেট ধারক থিন টেইল ডিজাইন যা এলইডি টেইল লাইট সহ বাইকের ডিজাইনকে সম্পূর্ণ করে তোলে।

ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশন

কেটিএম আরসি ১২৫ তার নিজ সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এতে ১২৪.৭ সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, 4-ভালভ, লিকুইড-কুল্ড, এফআই, ডিওএইচসি ইঞ্জিন রয়েছে। এই বাইকে সর্বাধিক শক্তি ১৪.৫ পিএস @৯২৫০ আরপিএম এবং সর্বাধিক টর্ক ১২ এনএম @৮০০০ আরপিএম রয়েছে। অন্যদিকে, বাইকটিতে একটি ছয়-স্পিড গিয়ারবক্স রয়েছে, যা এই বাইকটিকে উচ্চ গতিতে স্বচ্ছলভাবে চালাতে সহায়তা করে। ইঞ্জিন অন করার জন্য এই বাইকের ইলিক্ট্রিক স্টার্ট অপশন রয়েছে।

ডাইমেনশন

একটি স্পোর্টস বাইকের ডাইমেনশন খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভাল ডাইমেনশন ছাড়া কোন বাইকই সু-নিয়ন্ত্রিত বাইক হতে পারে না। কেটিএম আরসি ১২৫ বাইকটির সামগ্রিকভাবে খুব সুন্দর ডাইমেনশন রয়েছে। বাকি ফিচারগুলো এবং অন্যান্য ফিচারগুলো বিবেচনা করে বাইকটি পুরোপুরি আরসি 390 এর মতো বলা চলে প্রায় একই। বাইকের সীট হাইট ৮২০ মিমি যা যেকোন রাইডারের জন্যই ভাল। হুইলবেস প্রায় ১৩৪১ মিমি তুলনামূলকভাবে বেশিরভাগ স্পোর্টস বাইকের চেয়ে বেশি। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সটিও বেশ ভাল বলে মনে হচ্ছে যা ১৫৭ মিমি। তবে বাইকের ওজন ১৬০ কেজি, যা স্পোর্টস বাইকের ফিলিং আবারো দেয় এবং এই জাতীয় ওজন ভাল নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রাভিটি বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফুয়েল ট্যাঙ্কে দশ লিটার ফুয়েল রাখা সম্ভব। এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি আরসি ১২৫ এর হাইট ১০৯৮ মিমি, দৈর্ঘ্য ১৯৭৭ মিমি এবং সামগ্রিক প্রস্থ ৬৮৮ মিমি।

কেটিএম আরসি ১২৫ বর্তমান কারেন্ট প্রাইস 

এই দুরন্ত চলমান বাইকটির প্রাইস বর্তমান বাংলাদেশ বাজারে 3,90,000 টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই বাইকটির প্রাইস ইন্ডিয়ার মার্কেটের ভিতরে রয়েছে 1,87,439€নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই বাইকটির প্রাইস অফিশিয়াল ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে বর্তমান মার্কেটপ্লেস গুলোর ভিতরে।

তবে সর্বশেষ বলব যে কোম্পানির গাড়ি চালান না কেন সাবধান ভাবে চালাবেন কারণ একটি দুর্ঘটনায় সারা জীবনের কান্না।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads